মহিমান্বিত শবে-বরাত বা অর্ধ শাবানের রজনীঃ রমজান শুভাগমনের ঘন্টা
নতুন পাঞ্জাবি, টুপি পরে নিজ নিজ কাজ বন্ধ রেখে ,দলবেঁধে সবাই মিলে মসজিদে যাওয়া , কি যেন এক আবেশ , কি যেন এক উচ্ছ্বাস, এই মধুমাখা আবেগ সবাইকে মনে করিয়ে দেয় রমজানের আগাম বার্তা। আর শুরু হয়ে যায় রমজানের সাউন্ড এলার্ম।
রাত্রিটিকে ফারসি ভাষায় আদর করে বলে শবে-বরাত (সৌভাগ্য রজনী)। যেটা শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত। যেটাকে অর্ধ শাবানের রাত্রিও বলা হয় । যেটা শাবানের ১৫ তারিখ শুরুর রাত্রি। সকল বিতরকের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই তো একথা অবশ্যই স্বীকার করবে যে, এ রাত্রিটি রমজানের আগমনী বার্তার সুবাতাস বইয়ে দেয়। যা প্রতিটি মুসলিম হৃদয়কে আন্দোলিত করে।
সে রাত্রিতে বিশেষ কিছু কারণে মানুষ এভাবে এবাদত-মুখী হয়। সেটা আমার কোরআন হাদিস অধ্যায়ন এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত মতামত। কেউ এটাকে আবেগে বেদআত বলে উড়িয়ে দেওয়ার আগে অবশ্যই বিবেক দিয়ে চিন্তা করিবেন । সেটাই বলছি;
- এ রাত্রের উপস্থিতি রমজানকে শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব ভালোকরে মনে করিয়ে দেয়।
- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বছরের বেশিরভাগ সময়ই আরবি মাসের ১৩, ১৪, এবং ১৫ তারিখ রোজা রাখতেন, সে হিসেবেও শাবান এর ১৪ তারিখের দিবসেবা অন্য যে কোন দিবসে রোজা রাখা যায়। আর রাত্রিতে এবাদত করা যায়।
- আর সহীহ হাদীস দ্বারা এটা প্রমাণিত যে, রজব এবং শাবান মাস অত্যধিক বরকতপূর্ণ তাই পুরা শাবান মাস বা সাধ্য অনুযায়ী সে মাসের কোন দিবসে বা রাত্রিতে বিশেষভাবে এবাদত বা প্রার্থনায় নিমগ্ন হওয়াটা কোনরূপ অন্যায়তো নয়ই বরং বড় ধরনের ভালো কাজ।
- অন্যদিকে ইবনে মাজাহ শরীফের ১৩৮৯, ১৩৯০ নাম্বার হাদিস (এবং আরও অনেকগুলো হাদিস দ্বারা) অর্ধ শাবানের রাত্রির গুরুত্ব সম্পর্কে এবং ফজিলত সম্পর্কে খুব স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে। (প্রয়োজন মনে করলে সে হাদীসগুলো দেখে নিতে পারেন) ।
সে থেকে আমরা যে কাজগুলো শাবানের রাত্রিতে আল্লাহকে ভালবেসে এবং প্রিয় নবীর (সাঃ) মহব্বতে করতে পারি তা নিম্নরূপঃ
সেটা যাচাই-বাছাই করে নেয়ার দায়িত্ব আপনার। আমার মতামত হল বিতর্কে না গিয়ে এবাদতে মশগুল থাকা উত্তম । কারণ ইসলাম অনুমোদিত প্রতিটি ইবাদতই আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।
সে সময় যা করা যেতে পারেঃ
- কোরআন তেলাওয়াত বা অধ্যয়ন করতে পারেন।
- মনোযোগ সহকারে নামাজ পড়তে পারেন ।
- সুন্নাহ সমর্থিত যেকোনো ধরনের জিকির করতে পারেন ।
- রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর উপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করতে পারেন।
- রোগ মুক্তি, ক্ষমা প্রার্থনা সহকারে যেকোনো ধরনের আরজি আল্লাহর কাছে পেশ করতে পারেন।
- বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতে পারেন ।
- রাত্রির আগে-পরের যে কোন দিবসে নফল রোজা রাখতে পারেন।
- যে কোন বৈধ প্রয়োজন আল্লাহর কাছে চাইতে পারেন।
কোরআন হাদিসের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনই মুমিন জীবনের একমাত্র চাওয়া পাওয়া । এ প্রত্যাশায় সকলকে টাইম টেলিভিশনের পক্ষ থেকে আগত রমজানের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি “আহলান সাহলান মাহে রমজান”