November 21, 2024
কিভাবে হল শিরকের সূচনা

কিভাবে হল শিরকের সূচনা

কিভাবে হল শিরকের সূচনা

কিভাবে হল শিরকের সূচনা  

‘আল্লাহর গুণাবলী, কর্ম ,তার সত্তা, ক্ষমতা বা  ইবাদতে কাউকে যেকোনোভাবে অংশীদার করার নামই হলো  শিরক।  সেটার ইতিহাস আমরা সংক্ষেপে জেনে নিব।  কিভাবে আসলো সেই  শিরক’।  আর ছড়িয়ে পড়ল তাবৎ দুনিয়ায়

ক্ষমাহীন এক জঘন্যতম অপরাধ শিরক। শিরকের ব্যাপারে সর্বোচ্চ কঠোরতা প্রদর্শন করেছে ইসলাম। ইসলাম শুধু শিরককে প্রত্যাখ্যানই করেনি; বরং শিরক হয়ে যাওয়ার মাধ্যমকেও ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। যা দ্বারা শিরক হতে পারে সেসব কাজ থেকেও বিরত থাকতে ইসলাম কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন, “নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরিক করে। … (সূরা: আন নিসা, আয়াত: ৪৮)

পবিত্র কুরআনে শিরকের সূচনা সম্পর্কে বলা হয়েছে যে,  পৃথিবীতে শিরকের সূচনা হয়েছে হজরত নুহ(আ:)এর কওম দ্বারা। হজরত আদম আ:-এর ছেলে কাবিল যে অন্যায়ভাবে নিজ ভাই হাবিলকে হত্যা করেছিল সেই কাবিলের বংশের সপ্তম পুরুষের কাছ থেকে শিরকের সূচনা হয়েছিল।

হজরত নুহ (আ:) যে জাতির কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন সে কওম বা জাতির পাঁচজন ব্যক্তি ছিল যাদের নাম কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন-

১. ওদ্দা
২. সুয়া
৩. ইয়াগুস
৪. ইয়াউস
৫. নাসর।

এই পাঁচজন সম্মানিত নেককার বান্দা ছিলেন। এদের দ্বারা মানুষ হেদায়াতের পথ খুঁজে পেত। নেককাজে আগ্রহ পেতেন।

তাদের ইন্তেকালের পর কওমের লোকেরা আফসোস করতে লাগল এবং বলতে লাগল- আমরা এখন কার কাছে গিয়ে হেদায়াতের কথা শুনব?

এরই মধ্যে শয়তান তাদের অন্তরে এ কথার উদয় করে দিলো যে, ওই নেককার ব্যক্তিরা তো চলে গেছেন; এখন উত্তম পন্থা হলো তাদের মূর্তি বানিয়ে ইবাদতখানায় রেখে দাও, তাতে তোমরা ইবাদতে মজা পাবে।

কথামতো তারা তাদের বুজুর্গ ব্যক্তিদের মূর্তি বানিয়ে তাদের ইবাদতখানায় রেখে দিলো। এ কাজে যদিও এই   প্রজন্মের শিরকের উদ্দেশ্য ছিল না।

কালক্রমে তাদের ২য় প্রজন্মও শিরক করেনি; কিন্তু তারা এই মূর্তিগুলোকে অন্যান্য বস্তু থেকে পৃথকভাবে অতি বেশি সম্মান প্রদর্শন করত।

৩য় প্রজন্ম এসে মূর্তিগুলোর নামে মান্নত করতে শুরু করে দিলো। নিজেদের প্রয়োজন পূরণের জন্য মূর্তিগুলোর কাছে আবেদন নিবেদন করতে শুরু করে দিলো। তাদের কাছে সন্তান, রিজিক চাইতে লাগল। এবং তারা ওই মূর্তিগুলোর পূজা শুরু করে দিলো। মূর্তিগুলোকে সিজদাও করতে লাগল। মূর্তিগুলোকে তাদের মাবুদ হিসেবে বিশ্বাস করতে লাগল।

এভাবেই পর্যায়ক্রমে মূর্তিপূজার প্রচলনের মাধ্যমে শিরকের প্রচলন শুরু হয়ে গেল এই নশ্বর ধরায়। আল্লাহ তায়ালা বান্দার সব পাপকাজ ক্ষমা করে দিলেও শিরকের মতো জঘন্যতম পাপ ক্ষমা করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন।

আজ আমাদের সমাজে নানা ধরনের শিরক কাজের প্রচলন আছে, যা আমরা জেনে না জেনে, ইচ্ছায়-অনিচ্ছায়, হাসি-তামাশায় করে ফেলছি।প্রতিটি মুমিনের উচিত জীবনের সর্বাবস্থায় শিরক থেকে বেঁচে থাকা। কেননা শিরক এমন একটি পাপ, যে পাপ একজন মুমিনের ইমান ধ্বংস করে দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X