সুইডেনে অবস্থিত তুরস্ক দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ তুরস্ক
“পৃথিবীর ইতিহাসে একটি নজিরও পাবেন না যে, ইসলাম ধর্মের কোন ব্যক্তি অন্য ধর্মের ধর্মগ্রন্থ , ধর্মগুরু বা অন্য কোন কিছুকে অবমাননা করেছে। অথচ সর্বজন স্বীকৃত মানব ; নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অবতীর্ণ অকাট্য ঐশী গ্রন্থ আল কোরআনসহ ইসলামের অনেক কিছুকেই অবমাননা করা হয় । যদিও আজ পর্যন্ত কোরআনের একটি অক্ষরকেও পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করার বা তার মতো করে একটি অক্ষর রচনা করার শক্তিও পৃথিবীর কোন ব্যক্তি দেখাতে পারেনি। এবং এই কোরআনে নূন্যতম কোন ভুলও কেউ ধরিয়ে দিতে পারেনি। তাহলে কেন কোরআনের প্রতি এই পোড়া কপাল-জনিত গর্হিত কাজ?”
তুর্কি দূতাবাস সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের উত্তর রেলওয়ে স্কয়ার নামক এলাকায় অবস্থিত। সম্প্রতি রাসমুস পালুদান নামে এক ব্যক্তি দূতাবাসের সামনে কোরআনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পালুদান ডেনমার্কের কট্টর-ডান রাজনৈতিক দল হার্ড লাইনের নেতা
সুইডেনের স্টকহোমে তুরস্কের দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছেন এক কট্টর ডানপন্থী ব্যক্তি। তুরস্ক এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
সম্প্রতি ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে তুরস্কের আপত্তি নিয়ে আলোচনা করতে সুইডেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর তুরস্ক সফর বাতিল করেছে তারা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরই ন্যাটোর সদস্য হওয়ার তৎপরতা শুরু করে সুইডেন। এখনো সদস্যপদ পায়নি। এ জন্য তুরস্কের কাছ থেকে সমর্থন প্রয়োজন সুইডেনের।
এর আগে গত বছর এপ্রিলে পালুদান ঘোষণা দেন মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজানে তিনি বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পবিত্র কোরআন পোড়াবেন। তাঁর এ ঘোষণায় সুইডেনজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল।
এ ঘটনার পরপরই তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, ‘আমাদের পবিত্র গ্রন্থের ওপর আক্রমণের মতো জঘন্য ঘটনার সম্ভাব্য কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার আড়ালে মুসলিমদের ও আমাদের পবিত্র মূল্যবোধের অবমাননাকারী ইসলামবিরোধী কাজের অনুমতি দেওয়া সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’
প্রকাশ্যে কোরআন শরিফ পোড়ানোর মতো এ ধরনের ধর্মবিরোধী কাজ নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় সুইডিশ কর্তৃপক্ষের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিত সাভাসগলু। তিনি বলেছেন, ‘মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনা কোনোভাবেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়, এটা একটা বর্ণবিরোধী কাজ।’
তুরস্ক ছাড়া সৌদি আরব, জর্ডান ও কুয়েতের মতো আরও কয়েকটি আরব দেশ সুইডেনে কোরআন শরিফ পোড়ানোর এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, সৌদি আরব আলোচনা, পরমতসহিষ্ণুতার মতো মূল্যবোধ ছড়িয়ে দেওয়া এবং ঘৃণা ও চরমপন্থা প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাচ্ছে।
সুইডেনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে তুরস্কে বিক্ষোভ চলছে। শনিবার আঙ্কারায় সুইডিশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়। এ ছাড়া আজ সন্ধ্যায় তুরস্কের অন্যতম বড় শহর ইস্তাম্বুলেও একটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম ইসলামোফোবিক ও উস্কানিমূলক ঘটনাকে ‘দুঃখজনক ও ভয়াবহ’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘সুইডেনে সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে আমি বা সুইডিশ সরকার এই ঘটনাকে সমর্থন করব।
1 Comment