November 12, 2024
মাহরাম কারা? তাদের পরিচয় জানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্যই জরুরি

মাহরাম কারা? তাদের পরিচয় জানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্যই জরুরি

মাহরাম কারা? তাদের পরিচয় জানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্যই জরুরি

মাহরাম কারা? তাদের পরিচয় জানা প্রত্যেক মুসলিমের জন্য অবশ্যই জরুরি

ভূমিকাঃ

মাহরামের পরিচয় জানার ফলে অনেক গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। যে সকল আত্মীয় তাদের সাথে দেখা করা পাপ, কিন্তু কখনও কখনও বিবাহের মত জঘন্য কাজও সাধারণ সাক্ষাতের সাথে সংঘটিত হয়ে যায় । তাই মাহরামের পরিচয় জানা সবার জন্য জরুরি।

ইসলামী পরিভাষায় মাহরাম দ্বারা বুঝায়, যাদেরকে বিবাহ করা হারাম বা অবৈধ এবং দেখা করা বা দেখা দেওয়া জায়েয বা বৈধ। মূল কথা হলো ইসলামি শরিয়তে যাদের সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক হারাম; তারাই মাহরাম।

তবে নিজ স্ত্রী  জীবিত থাকা অবস্থায় সে স্ত্রীর আপন বোনের সঙ্গে বিয়ে হারাম হলেও দেখা-সাক্ষাৎ করা  কোনোভাবেই বৈধ নয়।

নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য গায়রে মাহরাম (বা মাহরাম নয়) এর সঙ্গে পর্দা করা ফরজ। পর্দার সঙ্গে মাহরাম ও গায়রে মাহরামের সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত।

পুরুষের জন্য মাহরাম ১৪ জন। তারা হলেন 

মায়ের সমপর্যায়ের জন

১. মা

২. ফুফু (বাবার বোন)

৩. খালা (মায়ের বোন)

৪. শাশুড়ি ( স্ত্রী এর মা )

৫. দুধ-মা (যে মা ছোট বেলায় দুধ খাইয়ে ছিলেন)

বোনের সমপর্যায়ের জন

৬. নিজের বোন

৭. নানি (মায়ের মা)

৮. দাদি (বাবার মা)

৯. নাতনি (আপন ছেলে ও মেয়ের কন্যা)

১০. দুধ-বোন

মেয়ের সমপর্যায়ের জন

১১. নিজের  মেয়ে

১২. ভাতিজি (আপন ভাই-এর মেয়ে)

১৩. ভাগ্নি (আপন বোনের মেয়ে)

১৪. ছেলের বউ

এসব ব্যক্তি ছাড়া পুরুষরা বাকি সবার সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। তবে স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় স্ত্রীর আপন বোনকে বিয়ে করা যাবে না। আবার তার সঙ্গে দেখাও করা যাবে না।

নারীদের মাহরাম ১৪ জন। তারা হলেন-

বাবার সমপর্যায়ের জন

১. বাবা

২. চাচা

৩. মামা

৪. শ্বশুর

ভাইয়ের সমপর্যায়ের জন

৫. সহোদর ভাই

৬. নিজ দাদা

৭. নিজ নানা

৮. নিজ নাতি

৯. দুধ-ভাই

ছেলের সমপর্যায়ের জন

১০.নিজের ছেলে

১১. ভাইয়ের ছেলে

১২. বোনের ছেলে

১৩. মেয়ের জামাই

১৪. দুধ-ছেলে

 

একজন নারীর জন্য উল্লেখিত ব্যক্তিদের ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করা যাবে না। এমনকি অন্যদের সঙ্গে প্রয়োজন ছাড়া অযথা কথাবার্তা বলাও গুনাহের কাজ।

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমের তাদের সবার পরিচয় এভাবে তুলে ধরেছেন-

حُرِّمَتْ عَلَيْكُمْ أُمَّهَاتُكُمْ وَبَنَاتُكُمْ وَأَخَوَاتُكُمْ وَعَمَّاتُكُمْ وَخَالَاتُكُمْ وَبَنَاتُ الْأَخِ وَبَنَاتُ الْأُخْتِ وَأُمَّهَاتُكُمُ اللَّاتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَأَخَوَاتُكُم مِّنَ الرَّضَاعَةِ وَأُمَّهَاتُ نِسَائِكُمْ وَرَبَائِبُكُمُ اللَّاتِي فِي حُجُورِكُم مِّن نِّسَائِكُمُ اللَّاتِي دَخَلْتُم بِهِنَّ فَإِن لَّمْ تَكُونُوا دَخَلْتُم بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ وَحَلَائِلُ أَبْنَائِكُمُ الَّذِينَ مِنْ أَصْلَابِكُمْ وَأَن تَجْمَعُوا بَيْنَ الْأُخْتَيْنِ إِلَّا مَا قَدْ سَلَفَ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَّحِيمًا

“তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা এবং মেয়ে, বোন, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগিনী, দুধ মা, দুধ বোন, শ্বাশুড়ি, তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যার সঙ্গে সঙ্গম হয়েছ তার পূর্ব স্বামীর ঔরসজাত মেয়ে যারা তোমাদের তত্ত্বাবধানে আছে, কিন্তু যদি তাদের সঙ্গে তোমরা সহবাস না করে থাক, তবে (তাদের বদলে তাদের মেয়েদেরকে বিয়ে করলে) তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই এবং (তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে) তোমাদের ঔরসজাত পুত্রের স্ত্রী এবং এক সঙ্গে দু বোনকে (বিবাহ বন্ধনে) রাখা।  পূর্বে যা হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, দয়ালু“।  (সুরা নিসা : আয়াত ২৩)

পরিসংহারঃ

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। মাহরামের সঠিক বুঝ পাওয়া মাত্র তা মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X