ভারতে গোলাগুলীতে ২২ মাওবাদী নিহত
মাওবাদী (Maoist)
মাওবাদ হল গণ চীনের রাজনৈতিক নেতা মাও সেতুং-এর শিক্ষা থেকে উদ্ভূত একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ। এর অনুসারীরা মাওবাদী নামে পরিচিততাদেরকে অন্যভাবে ‘নকশাল’ বলা হয়। এবং তারা এটিকে মার্কসবাদ-লেনিনবাদের একটি সংশোধনবাদী রূপ বলে মনে করে। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি বা সিপিআই (মাওবাদী) হল ভারতের একটি মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টি এবং সামরিক সংগঠন। এর লক্ষ্য হল দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধের মাধ্যমে আধা-ঔপনিবেশিক এবং আধা-সামন্তবাদী ভারতীয় রাষ্ট্রকে উৎখাত করা নতুন একটি ভারত উপহার দেয়া। ২১শে সেপ্টেম্বর ২০০৪ তারিখে, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) একত্রিত হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) গঠন করে। বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে মাওবাদী ভারতে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।
ভারতের ছত্তিশগড়ে যৌথ বাহিনীর সাথে বন্দুকযুদ্ধে কমপক্ষে ২২ মাওবাদী নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিজাপুর এবং কাঙ্কের জেলায় দুটি পৃথক সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। পাল্টা হামলায় একজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যও নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাজ্যের বিজাপুর এবং কাঙ্কের জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়। পুলিশের মতে, বিজাপুর সংঘর্ষস্থল থেকে ১৮ জন এবং কাঙ্কের জেলা থেকে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ছত্তিশগড়ের বিজাপুর-দন্তেওয়ারা এলাকাটি ঘন জঙ্গলে বিস্তৃত। সেখানে বাহিনী এবং মাওবাদীদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৮ জন মাওবাদী এবং ‘জেলা রিজার্ভ গার্ড’-এর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন। আজ সকাল ৭টা নাগাদ উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ শুরু হয় এবং কয়েক ঘন্টা ধরে চলে।
বিজাপুর পুলিশের মতে, ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক সহ ১৮ জন মাওবাদীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অন্যদিকে, কাঁকের জেলার ছোটবেঠিয়ার কোরোস্কোডো গ্রামের কাছে আরেকটি অভিযানে, উভয় পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৪ মাওবাদী নিহত হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে যে, জেলা রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি), স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এবং কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল মাওবাদবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। এতে ডিআরজির একজন সদস্যও নিহত হয়েছেন।
অপারেশনের পরপরই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স-এ লিখেছেন, “নকশাল-মুক্ত ভারত অভিযানের অংশ হিসেবে, আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী আরও একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। ছত্তিশগড়ের বিজাপুর এবং কাঁকের এলাকায় দুটি পৃথক অভিযানে ২২ নকশাল নিহত হয়েছে।”
এর আগে, চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি, রাজ্যের বিজাপুর জেলার ইন্দ্রাবতী জাতীয় উদ্যানে উভয় পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ৩১ মাওবাদী এবং ২ পুলিশ সদস্য নিহত হন। এর আগেও, ২১ জানুয়ারি, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৬ মাওবাদী নিহত হন। সেই সংঘর্ষে জ্যেষ্ঠ মাওবাদী নেতা জয়রাম রেড্ডি, যিনি চালপথী নামে পরিচিত, তিনিও নিহত হন। জ্যেষ্ঠ এই কমান্ডারের মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকা ঘোষণা করা ছিল। সেই সময় ছত্তিশগড় ও ওড়িশার নিরাপত্তা বাহিনী যৌথ অভিযানটি পরিচালনা করেছিল। এই বছর এ পর্যন্ত ভারতে মোট ৬৯ জন মাওবাদী নিহত হয়েছে।