জুয়ায় হার, একই পরিবারের ৩ জনের আত্মহত্যা
সার্বজনীন ধর্ম ইসলাম জুয়ার ব্যাপারে সাংঘাতিক রকম কঠোর এবং জুয়া ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে রূপায়িত। তাই ইসলামে জুয়ার কোন স্থান নেই।
জুয়া
অনলাইন জুয়া বলতে বোঝায় ট্যাবলেট, কম্পিউটার, স্মার্টফোন, অথবা ইন্টারনেট সংযোগ সহ যেকোনো মোবাইল ফোনের মতো দূরবর্তী ডিভাইস ব্যবহার করে বাজি ধরা বা কোনো সুযোগ নিতে অফার পেতে অর্থের জন্য গেম খেলা। জুয়ার ফাঁদে ফেলে প্রতারকরা প্রথমে লাভের দিকে লোভ দেখিয়ে পরে সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং এটার রেকর্ডই বেশি।
জুয়া হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে এমন অনেক জিনিস রয়েছে। কিছু গেমের জুয়ার উপাদানও রয়েছে – উদাহরণস্বরূপ, বেশ কয়েকটি অনলাইন গেমে বাজি বিদ্যমান। অনলাইন জুয়ার সাথে সম্পর্কিত কিছু ঝুঁকি, বিপদ এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অর্থ হারানো, ঋণ জমা হওয়া, লেখাপড়া বা কাজে খারাপ পারফর্ম করা এবং এমনকি হতাশা, উদ্বেগ এবং মানসিক চাপের ঝুঁকিতে থাকা, বা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া।
এই কারণেই বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের উচিত অনলাইন জুয়া কী, এটি কী রূপ নিতে পারে এবং যদি তারা মনে করে যে, কোনও শিশু বা তরুণ অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার ঝুঁকিতে রয়েছে তবে তারা কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে সে সম্পর্কে শিশু এবং তরুণদের শিক্ষিত করার চেষ্টা করা।
আর এই অনলাইন জুয়ার বিষাক্ত ছোবলে আকৃষ্ট হয়ে প্রকৃষ্ট রূপে জীবন বিনাশের পথ বেছে নিয়েছেন ভারতের কর্ণাটকের এই ঝলঝলাপরিবারটি।
ভারতের কর্ণাটকের মাইসুরু জেলায় অনলাইন জুয়ায় মোটা অঙ্কের টাকা হেরে একই পরিবারের তিন সদস্য আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবারের মধ্যে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। নিহতরা হলেন জশ অ্যান্থনি, তার ভাই জবি অ্যান্থনি এবং জবির স্ত্রী শর্মিলা।
পুলিশের মতে, জবি অ্যান্থনি এবং শর্মিলা আইপিএল ক্রিকেট ম্যাচ এবং অনলাইন বাজিতে প্রচুর টাকা হেরেছিলেন। তাদের ঋণখেলাপিরা বারবার টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাদের উপর চাপ দিচ্ছিল।
প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে জশ অ্যান্থনি প্রথমে সোমবার রাতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। মৃত্যুর আগে, তিনি একটি ভিডিও রেকর্ড করেন যেখানে তিনি অভিযোগ করেন যে, তার ভাই জবি এবং তার ভাইয়ের স্ত্রী শর্মিলা তাদের বোনের নামে প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ নিয়েছিলেন।
ভিডিওতে জশ বলেন, “আমার বোনের স্বামী নেই। কিন্তু জবি এবং তার স্ত্রী আমার বোনের নামে ঋণ নিয়ে তাকে প্রতারণা করেছেন। জবি এবং শর্মিলা আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।”
জশের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর, জবি এবং শর্মিলাও মঙ্গলবার গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
কর্নাটকে বিজেপি সরকারের আমলে অনলাইন জুয়া এবং বাজি নিষিদ্ধ করার জন্য কর্ণাটক পুলিশ (সংশোধন) আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল। তবে, ২০২২ সালে হাইকোর্ট আইনটি বাতিল করে দেয়।
এর আগে, রাজ্যের প্রাক্তন স্পিকার এবং কংগ্রেস নেতা রমেশ কুমার বিধানসভা অধিবেশনে ক্রমবর্ধমান বাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।