February 13, 2025
ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণার দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম

ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণার দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম

ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণার দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম

ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণার দাবিতে সরকারকে আলটিমেটাম

ভারতে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণা করার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন উত্তরাখণ্ড শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। ৩৩ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৭ মার্চের মধ্যে সরকার যদি এই দাবি মেনে না নেয়, তাহলে তিনি বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

দেশের হিন্দু সংগঠনগুলি দীর্ঘদিন ধরে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণা করার দাবি জানিয়ে আসছে। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি। যার কারণে সম্প্রতি শঙ্করাচার্য ক্ষোভ প্রকাশ করে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি কেন্দ্রকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এই সময়ের মধ্যে গোমাতাকে রাষ্ট্রমাতা ঘোষণা করতে হবে। যদি এটি না করা হয়, তাহলে দিল্লির রামলীলা ময়দানে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গরু প্রতিষ্ঠার জন্য একটি নির্ধারক দিবসের আয়োজন করা হবে। সেখান থেকে আমরা এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করব। পরবর্তী কৌশল এখান থেকেই নির্ধারণ করা হবে।’

শঙ্করাচার্যের মতে, শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে, গরুর দেহে ৩৩ কোটি দেব-দেবী বাস করেন। আমরা গত দেড় বছর ধরে গরুকে ‘রাষ্ট্রমাতা’ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছি। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, সরকারের উচিত গরুকে পশু হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ না করে ‘রাষ্ট্রমাতা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া।

২০ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে গোপাল মনির নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন ‘গো ক্রান্তি মঞ্চ’ আয়োজন করে। চারটি শঙ্করাচার্য পীঠের সমর্থনে সেখানে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। এই বিষয়ে ইতিমধ্যে তিনটি গো সংসদ সংগঠিত হয়েছে। ২০২৪ সালে, বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠনের সদস্যরাও এই বিষয়ে গোবর্ধন থেকে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করেছিলেন। যদিও সরকার এই বিষয়ে কোনও জোরালো বক্তব্য দেয়নি। এবার আদাজল পান করে মাঠে নেমেছেন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী।

তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমাদের দাবি গরুকে পশুর শ্রেণী থেকে বাদ দিয়ে ‘রাষ্ট্রমাতা’ ঘোষণা করা হোক এবং গোহত্যাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হোক।’ রাজ্য সরকার স্কুল পাঠ্যক্রমে গরুকে অন্তর্ভুক্ত করতে চলেছে। কিন্তু সেখানেও যদি গরুকে পশু বলা হয়, তাহলে লাভ কী?’

ভারতের পাঠ্যপুস্তকে গরুর চিঠি!

উল্লেখ্য ২০১৬ সালে হিন্দুত্বের এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে ভারতের রাজস্থান রাজ্য প্রথমবারের মতো গরু মন্ত্রণালয় গঠন করেছে। এবার সেই রাজ্যে গরু নিয়ে আরেকটি বিতর্কিত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের স্কুল বই সংশোধন করে একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। যেখানে একটি গরু স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে মা হিসেবে চিঠি লেখে।

তখন পঞ্চম শ্রেণির হিন্দি ভাষার পাঠ্যপুস্তকে হিন্দু দেব-দেবীর পরিচয়ের অধ্যায়ে একটি গরুর একটি বড় ছবি যুক্ত করা হয়েছিল । গরুকে মায়ের মতো সম্মান করলে মানুষ কতটা উপকার পেতে পারে তা উল্লেখ করা হয়েছিল।

ছাত্রছাত্রীদের ‘আমার ছেলে-মেয়ে’ বলে সম্বোধন করে গরুর পক্ষে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আমি তোমাদের প্রত্যেককে দীর্ঘ জীবন, বুদ্ধি, সুস্বাস্থ্য, সুখ এবং সমৃদ্ধি দিতে পারি। যারা আমার গুরুত্ব বোঝেন এবং আমাকে নিজের মা হিসেবে মনে করেন, আমিও তাদের তাদের সন্তানের মতো ভালোবাসব।’

চিঠিতে এরপর মানব সমাজে গরুর অবদান তুলে ধরা হয়েছে। গরুটি লিখেছে, “আমি দুধ, মাখন এবং ঘি উৎপাদন করে মহান ঔষধ সরবরাহ করি। আমার মূত্র এবং বর্জ্য থেকে ওষুধ, কীটনাশক এবং সার তৈরি হয়। আমার ছেলে, ষাঁড়, জমি চাষে তোমাদের সাহায্য করে। এর পাশাপাশি, আমি আমার শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে পরিবেশকে বিশুদ্ধ করি।”

পাঠ্যপুস্তকে যুক্ত করা অধ্যায়টি গরু পালন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী ওতারাম দিওয়াসি অত্যন্ত প্রশংসা করেছেন। তিনি  বলেন, “গরুদের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।”

তবে, এই অধ্যায়টি শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জানা বা পড়ার জন্য যোগ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে যে পরীক্ষায় এর থেকে কোনও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হবে না।

আরো পড়তে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X