ইউটিউব দেখে অস্ত্রোপচার করলেন ভুয়া ডাক্তার, কিশোরের মৃত্যু
১৫ বছরের একটি ছেলের পিত্তথলিতে পাথর হয়েছিল। সঙ্গে ছিল বমিও। আর তা এড়াতে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু সেখানেই তিনি ভুয়া চিকিৎসকের খপ্পরে পড়েন। ইউটিউবের ভিডিওর ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করেন ভুয়া ডাক্তার। আর এক পর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে কিশোর। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। এই ঘটনায় থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভুয়া চিকিৎসকসহ অন্যদেরও খুঁজছে পুলিশ। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদন অনুসারে, একটি ইউটিউব ভিডিও দেখার পরে পিত্তথলি অপসারণের অপারেশন করার পরে বিহারের সারানে ১৫বছর বয়সী এক ছেলে মারা যায়।এনডিটিভি জানিয়েছে , অস্ত্রোপচারের পর কিশোরের অবস্থার অবনতি হলে, ‘ডাক্তার’ তাকে রাজ্যের রাজধানী পাটনার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। পথিমধ্যে ছেলেটি মারা যায় এবং ‘ডাক্তার’ ও তার সাথে থাকা অন্যরা লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায় বলে কিশোরটির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
নিহত ছেলের নাম কৃষ্ণ কুমার। তার পরিবারের সদস্যরা জানান, কৃষ্ণ কুমার বেশ কয়েকবার বমি করার পর তাকে সরনের গণপতি হাসপাতালে নিয়ে যান।
তার বাবা চন্দন বলেন, আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই বমি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তার অজিত কুমার পুরী বলেছেন- তার অপারেশন করা দরকার। ইউটিউবে ভিডিও দেখে অপারেশন করেন তিনি। আমার ছেলে পরে মারা যায়।’
পরিবারের সদস্যরা জানান, ওই ‘ডাক্তার’ উপযুক্ত যোগ্যতা আছে কি না তা তারা জানেন না। আমরা মনে করি সে ভুয়া ডাক্তার।
নিহত কিশোরের দাদা জানান, বমি বন্ধ হওয়ার পর ছেলেটি ভালো বোধ করছিল। কৃষ্ণ কুমারের দাদা প্রহ্লাদ প্রসাদ বলেন, “কিন্তু ডাক্তার তার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে পরিবারের সম্মতি ছাড়াই ছেলের অপারেশন শুরু করেন।” ছেলেটা তখনি যন্ত্রণায় পড়ে যায় । আমরা যখন ডাক্তারকে তার ব্যথার কারণ জিজ্ঞাসা করি, তিনি আমাদের দিকে ফিরে জিজ্ঞেস করলেন আমরা কি ডাক্তার? পরে সন্ধ্যায় ছেলেটির শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় এবং তারপর পাটনায় সে মারা যায় এবং তারা ছেলেটির লাশ হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে পালিয়ে যায়।’
তার যোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কেন তারা তাকে অজিত কুমার পুরীর কাছে নিয়ে গিয়েছিল জানতে চাইলে, পরিবারের সদস্যরা বলেন, “আমরা শুধু চেয়েছিলাম বমি বন্ধ হোক।” তিনি আমাদের সম্মতি ছাড়াই অপারেশন করেছিলেন।”
এনডিটিভি বলছে, পুলিশ এই ঘটনায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে এবং মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। স্বঘোষিত ডাক্তার এবং গণপতি সেবা সদনের অন্যান্য কর্মীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।