মুসলিম যুবককে নির্মম নির্যাতন করে বিজেপি নেতা: জোর করে থুথু চাটতে…
মুসলমানরা মক্কায় মুশরিকদের (হিন্দুদের) দ্বারা এবং মদিনায় ইহুদীদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিল। তখন মুসলমানদের রক্তে উত্তপ্ত মরুভূমি সিক্ত হয়েছিল। মুসলমানরা তখনও কাছে নতি স্বীকার করেনি। সবসময় তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে মেরুদণ্ড সোজা করে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।
বুলেট এসেছে, প্রাণ গেছে। এক সন্তান শহীদ হয়েছে , মা তার অন্য সন্তানকে শ্রুত্রুর সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে । ভয় শব্দটি মুসলিম অভিধানে নেই। হয় শহীদ ,নয়তো গাজী।মুশরিক (হিন্দু) এবং ইহুদী এই দুই জাতি প্রথম থেকেই মুসলমানদের শত্রু ছিল। এটা কুরআনেরও ভাষ্য । আজও তার ব্যতিক্রম নয়।
অত্যাচারের ফল হলো মক্কা ও মদিনায় ইসলামের পতাকা প্রথম উড়েছিল। মুশরিক ও ইহুদীরা শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়। যেখানে অত্যাচার, সেখানেই ইসলামের বিজয়। এটাই মুসলিম বিজয়ের পথ। রক্ত প্রবাহিত হবে। তিনি শহীদ হবেন। দুঃখ ক্ষণস্থায়ী। সুখ চিরস্থায়ী। তারা ঘুমন্ত মুসলমানদের জাগিয়ে তুলছে। অত্যাচার ও জুলুম যত বাড়বে, ওমর ইবনে খাত্তাবের (র.) আগমনের পথ ততটাই খুলে যাবে।
তারা ভারত; গরু তাদের কাছে মূল্যবান, আর সেটাও শুধু ইন্ডিয়ান গরু অন্য দেশের গরু নয়। কিন্তু মানুষ বা মুসলমান নয়। তারা কোরআন পুড়িয়েছে, মসজিদের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে, মসজিদে আগুন দিয়েছে, মসজিদের মিনারে হনুমানের পতাকা টাঙিয়েছে, মুসলমানদের নির্যাতন করে হত্যা করেছে। মুসলমানরা শান্তিপ্রিয়, কিন্তু অন্যায়কে অন্যায় বলে প্রতিবাদ করতে জানে। মুসলমানরা চিৎকার করলে তাদের হৃদয় মন্দির ধ্বংস হয়ে যাবে। কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ, গুজরাট বা উত্তরপ্রদেশ বা দিল্লি মুসলমানদের রক্তে লাল ; এখন আবার ঝাড়খণ্ডে ।
মানুষ আগে না জীবন আগে, যার এই জ্ঞান নেই, তার ধর্ম যাই হোক না কেন, সে মানুষ নয়। সে ধর্ম বোঝে না। সে একজন উগ্র সন্ত্রাসী সে অমানুষ। অনমনীয় হয়ে অত্যাচারী হওয়া যায়, ধার্মিক হওয়া যায় না।তারই ধারাবাহিকতায় ভারত ইহকাল ও পরকালে শ্রেষ্ঠ জাতি মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে।
ভারতে দিন দিন অসহায় মানুষের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়ছে। নতুনভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বিশেষ করে মুসলিম ও নিম্নবর্ণের মানুষ এই নির্যাতনের শিকার বেশি। সম্প্রতি, ২ জন নিম্নবর্ণের যুবকের উপর প্রস্রাব করা অত্যাচারীরা তাদের পা চাটতে বাধ্য করেছিল। এবার এক মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করে নির্মমভাবে অত্যাচার চালাল বিজেপি নেতা কুখ্যাত দেবেন্দ্র কুনওয়ার। প্রথমে বেদম প্রহার করা হয়। এরপর একের পর এক লাথি মারে। তারপর মাটিতে থুুতু পেলে সেই থুতু চাটতে জোর করে বাধ্য করা হয়।
জানা যায়, প্রথমে লাথি, কান ধরে ওঠবোস। তারপর নিজের থুতু চাটতে জোর করে বাধ্য করা হলো মুসলিম এক যুবককে। ভারতের এক বিজেপি নেতার এমন নৃশংস কাজের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নেটিজেনরা এ নিয়ে নেতার সমালোচনা করেছেন।
দ্য হিন্দু ও টাইমস নাউ-এর খবরে বলা হয়েছে, গত ৬ আগস্ট ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট।
ভাইরাল ফুটেজে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র কুনওয়ারকে ভিড়ের মধ্যে সাদা পোশাকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায়। তিনি বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক। তার সামনে অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তৌসিফ নামের এক মুসলিম যুবক।
ভিডিওতে, দেবেন্দ্রকে কখনও কখনও তাকে লাথি মারতে দেখা যায়, কখনও কখনও কঠোরভাবে তার কান ধরে উঠতে নির্দেশ দেয়। তৌসিফ মুখ বন্ধ করে সেই নির্দেশ পালন করে। অবশেষে তাকে মাটিতে থুথু ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয় এবং তার থুথু চাটতে বাধ্য করা হয়।
প্রাক্তন বিজেপি বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন চিৎকার করে তৌসিফকে নানাভাবে হেনস্থা করছিল। শেষ পর্যন্ত থুথু চাটতে জোর করলে বাধ্য হন ওই যুবক।
এই অমানবিক ঘটনার ছবি সামনে আসতেই শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোশ্যাল মিডিয়া এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে দল বলেছে, ‘ঝাড়খণ্ডে এক প্রাক্তন বিজেপি বিধায়কের দ্বারা মুসলিম যুবককে হয়রানির ঘটনাটি অত্যন্ত অমানবিক। বিজেপি নেতাদের নৈতিক বোধের অভাব স্পষ্ট। সামগ্রিকভাবে দলের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
যদিও ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, পুলিশ দাবি করেছে যে তারা হয়রানির কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
আরও পড়ুন
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে গুঁড়িয়ে দেয়া ১২ শতাধিক বাড়ির মালিক বেশিরভাগই মেওয়াতি মুসলিম
খবরে বলা হয়, তৌসিফ দুমকার সাধুদিহ গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামবাসীরা ইতিমধ্যেই তাঁর হেনস্থার জন্য অভিযুক্ত বিজেপি নেতার শাস্তি দাবি করছেন। কিন্তু নিজের ‘দোষ’ মানতে নারাজ বিজেপি নেতা। তৌসিফ মেয়েদের নদীতে গোসল করার ছবি তুলছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। তাই তাকে ‘শাস্তি’ দিয়েছেন।
যদিও দেবেন্দ্রের দাবি মানতে নারাজ গ্রামবাসী। তারা বললো এসব কিছুই হয়নি। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিজেপি নেতা নিজের দোষ ঢাকতে চাইছেন।
প্রসঙ্গত, বিজেপি বিধায়কের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশে এক দলিত ব্যক্তির উপর প্রস্রাব করার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনা ভারতেও বিতর্কের জন্ম দেয়। পরে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান দলিত লোকটিকে তার বাড়িতে ডেকে তার পা ধুয়ে ক্ষমা চান।
1 Comment