বিভিন্ন দেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা
খালিস্তান সমর্থকরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা চালায় যখন সেসব দেশ খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেছিল। হামলার শিকার হয়েছেন রাষ্ট্রদূতরাও। পাঞ্জাবে অমৃতপালকে ধরার জন্য এখন অভিযান চলছে। কিন্তু বিদেশে বসবাসরত শিখরা এর প্রতিবাদ করছেন। যেসব দেশে প্রচুর শিখ জনসংখ্যা রয়েছে সেসব দেশে ভারতীয় দূতাবাস আক্রমণের শিকার হচ্ছে।
খবর অনুযায়ী, এই হামলা প্রথমে ব্রিটেনে হলেও পরে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে হামলা হয়েছে। পাঞ্জাব পুলিশের ৮০ হাজার সদস্যের বিশাল বাহিনী রয়েছে। এটা দিয়ে তারা অমৃতপালকে খুঁজছে। অমৃতপাল কীভাবে এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে তা নিয়ে ভারতে অস্বস্তিও রয়েছে। তবে রবিবার লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে পুলিশের এই অভিযানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে খালিস্তানপন্থী সংগঠনগুলো।
একজন বিক্ষোভকারী দূতাবাসের প্রবেশপথে ঝোলানো ভারতীয় পতাকাও টেনে নামিয়ে দেয়।
এই ঘটনার পরে, বেশ কয়েকটি শিখ সংগঠন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে ভারতীয় কনস্যুলেটের সামনে বিক্ষোভ করতে আসে। যা পরে সহিংস হামলায় রূপ নেয়। নগর পুলিশের দেয়া অস্থায়ী নিরাপত্তা বাধাগুলো সরিয়ে বিক্ষোভকারীরা কনস্যুলেট ভবনের দিকে অগ্রসর হয়। সেখানেও ভারতের জাতীয় পতাকা নামানো হয় এবং দুটি হলুদ খালিস্তানি পতাকা ঝুলানো হয়। বিশৃঙ্খলার এক পর্যায়ে তারা খালিস্তানপন্থী স্লোগান দেওয়ার জন্য দূতাবাসের কর্মীদের ওপর হামলারও চেষ্টা করে। কয়েকজনকে হাতে লাঠি ও লোহার রড নিয়ে দূতাবাস ভবনের দরজা-জানালায় আঘাত করতেও দেখা গেছে। কনস্যুলেট ভবনের দেয়ালে খালিস্তানপন্থী গ্রাফিতি স্প্রে করে অবশেষে তারা চলে যায়।
এদিকে, কানাডায় ভারতীয় প্রবাসীদের একটি সংগঠন সোমবার দেশে নবনিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় কুমার ভার্মাকে স্বাগত জানাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। কিন্তু অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টা আগে, শত শত খালিস্তান সমর্থক সেখানে জড়ো হয় এবং ভারত বিরোধী স্লোগান দেয়। তাদের অনেকের হাতে তলোয়ারও ছিল। যার মাধ্যমে তারা খালিস্তানের পক্ষে আওয়াজ তুলছিল। তাদের প্রতিবাদের মুখে, রাষ্ট্রদূত ভার্মা শেষ পর্যন্ত সারে যান কিন্তু অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি। খালিস্তানি বিক্ষোভ কভার করা একজন ভারতীয় সাংবাদিককেও স্থানীয় পুলিশ জোর করে সরিয়ে দিয়েছে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বেশ কয়েকটি খালিস্তানপন্থী সংগঠনের কর্মী দেশটির পার্লামেন্টের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে।
এর আগেও বেশ কয়েকবার কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসে হামলা হয়েছে। ২০১৮ সালে একটি গাড়ি বোমায় দূতাবাসের দুই কর্মকর্তা, দুই নিরাপত্তা কর্মী এবং একজন আফগান চালক নিহত হন।
উল্লেখ্য, পাঞ্জাবের খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব পুলিশের অভিযানে ক্ষুব্ধ খালিস্তান সমর্থকরা। এই খালিস্তানিরা শুধু ভারতে নয় বিদেশেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার খালিস্তাপন্থীদের একাধিক টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। এই তালিকায় কানাডার নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা জগমিত সিং, কানাডিয়ান কবি রুপি কৌর এবং সামাজিক কর্মী গুরদীপ সিং সাহোতার টুইটার অ্যাকাউন্টও রয়েছে। ‘ইউনাইটেড শিখস’ নামে একটি স্বাধীন সংস্থার টুইটার অ্যাকাউন্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।