ভারতের গুজরাটে সেতু ধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১
ভারতের গুজরাটের মরবিতে ব্রিটিশ আমলের একটি সেতু সংস্কারের মাত্র এক সপ্তাহ পরেই ভেঙে পড়েছে। মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৪১ বেড়েছে।
এছাড়াও, এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং অনুসন্ধান এখনও চলছে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সোমবার (৩১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ।
সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো ঐতিহাসিক ঝুলন্ত সেতুটি রবিবার গুজরাটের মরবি জেলার মাচু নদীতে ভেঙে পড়ে। মেরামত শেষে চারদিন আগে সেতুটি খুলে দেওয়া হয়। ভেঙে পড়ার সময় সেতুটিতে পাঁচ শতাধিক মানুষ ছিলেন।
গুজরাট রাজ্যের রাজধানী আহমেদাবাদ থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই ঝুলন্ত সেতুটি রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ভেঙে পড়ে। ঘটনার সময় ছট পূজার কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ সেতুতে জড়ো হয়েছিল।
দুর্ঘটনার পরপরই, প্রাথমিকভাবে মৃতের সংখ্যা ৪০ বলে জানানো হয়েছিল। পরে রাতে এটি সংশোধন করে ৯১ হিসাবে প্রকাশ করা হয়েছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সোমবার সকালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪১ হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের মতে, ঐতিহাসিক সেতু ধসের ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তিন দিনের সফরে গুজরাটে রয়েছেন। রোববার সেতুটি ভেঙে পড়ার ঘটনায় জরুরি উদ্ধার অভিযানের নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া সোমবার তিনি দুর্ঘটনাস্থলে যেতে পারেন বলে কয়েকটি গণমাধ্যম জানিয়েছে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জাতীয় ত্রাণ তহবিল দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০,০০০ রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। এছাড়াও, রাজ্য সরকার নিহতদের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের পরিবারকে ৫০,০০০ রুপি দেওয়ার ঘোষণা করেছে।
প্রায় ১৫০ বছর আগে নির্মিত মোরবির এই ঝুলন্ত সেতুটিও ভারতের ঐতিহাসিক স্থাপনার তালিকায় রয়েছে। গুজরাটের স্থানীয় নববর্ষ উপলক্ষে মেরামত করার পর চার দিন আগে (২৬ অক্টোবর) সেতুটি আবার খুলে দেওয়া হয়েছিল৷
মরবি পৌরসভার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সঠিক ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই সেতুটি আবার খুলে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি ট্রাস্ট সেতুটি মেরামত ও সংস্কার করেছে। কিন্তু ট্রাস্ট রাজ্য সরকারের ফিটনেস সার্টিফিকেট জমা না দিয়েই সেতু খুলে দেয়।
দুর্ঘটনার পরপরই ভারতের ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ-এর পাঁচটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দ্রুত উদ্ধার অভিযান শুরু করে। পরে উদ্ধার অভিযানে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী যোগ দিয়ে অভিযান জোরদার করা হয়।