এবারই প্রথম কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিশ্বকাপের উদ্বোধন
একটি আলোঝলমলে উজ্জ্বল মঞ্চ। ওস্তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে এক এক করে মঞ্চে হাজির হল সদ্যই শৈশব পেরুনো কতিপয় কিশোর। তাদের সবাই ঐতিহ্যবাহী আরবি সাদা পোশাক বেস্ত পরিধান করে। ওস্তাদে ঠিক মাঝখানে বসে আছেন। তিনি একজন ছাত্রকে ডেকে তার পাশে বসালেন, তাকে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করতে বললেন। সুমধুর কন্ঠে, ছোট্ট ছাত্রটি পবিত্র কোরআনের মহিমান্বিত সূরা আর-রহমানের প্রথম ছয়টি আয়াত তেলাওয়াত করে।
“১) আর-রহমান। ২) ‘আল্লামাল কুরআন। ৩) খলাকাল ইনসান। ৪) ‘আল্লামাহুল বায়ান। ৫) আশশামছু ওয়ালকমারু বিহুসবান। ৬) ওয়ান্নাজমু ওয়াশশাজারু ইয়াসজুদান।“
যার বাংলা অর্থ – ‘১) করুণাময় আল্লাহ। ২) শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন, ৩) সৃষ্টি করেছেন মানুষ, ৪) তাকে শিখিয়েছেন বর্ণনা। ৫) সূর্য ও চন্দ্র হিসাবমত চলে। ৬) এবং নক্ষত্র ও বৃক্ষাদি সেজদাবনত অবস্থায় আছে।’
ব্যাস উদ্বোধন হয়ে গেল ফিফা ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ। গত ক’দিন ধরে এমন একটি ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পরে আয়োজক কাতার নিশ্চিত করেছে পরিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমেই হবে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধন। যা শুধু ফুটবল কেন, যে কোনো ক্রীড়া বিশ্বকাপেই অনন্য এক নজির।
বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই বাড়তি উত্তেজনা, উন্মাদনা পাগলামো । সেই রোমাঞ্চের মিটার এবার আরেকটু বাড়িয়ে, নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এবারই প্রথম কোনো মুসলিম দেশ হতে যাচ্ছে ফুটবলের এই ‘মহারণ’। নতুনত্ব চমক তো আছেই , ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রতিবারই যেখানে আসর বসেছে গ্রীষ্মকালে (জুন-জুলাই), সেখানে মরূর দেশে হচ্ছে শীতকালে (নভেম্বর-ডিসেম্বরে)! গোটা বিশ্বের রাঙ্গা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেবার অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই তেল -ডলারের উৎপাদনশীল দেশটি যারপরনাই হয়ে লেগেছিল। যার ফলে আয়োজক স্বত্ব পাওয়ার পর থেকে গত ৫ বছরে সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের দৃষ্টিনন্দন ৮টি স্টেডিয়াম। যার প্রতিটিই সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত! তার একটি আল বায়েত স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৮টায় বসতে যাচ্ছে বর্ণিল এই উদ্বোধনী আয়োজন। দোহার কেন্দ্র থেকে ৪০ কিমি দূরে আল খোরে সেই স্টেডিয়ামে ষাট হাজার দর্শক উপভোগ করতে পারবেন বর্ণিল এই অনুষ্ঠানটি।