দেশের এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণগ্রস্ত
দেশের এক-তৃতীয়াংশ পরিবার ঋণগ্রস্ত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ গৃহস্থালি আয়-ব্যয় জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বলা হয়েছে, ছয় বছরের ব্যবধানে দেশের মানুষের পরিবারকে ঋণ দেওয়া বা দেওয়া বেড়েছে দ্বিগুণ। বিবিএস সম্প্রতি খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২-এর প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করেছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩৭ শতাংশ পরিবার গত এক বছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা বন্ধুদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছেন। গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিপ চলাকালীন, গড়ে ৩৭.০৩শতাংশ পরিবার ঋণ বা ধার নেওয়ার কথা জানিয়েছে।২০১৬ সালের জরিপে,২৯.৭০ শতাংশ পরিবার ঋণ নিচ্ছিল। সে অনুযায়ী, গত ছয় বছরে দেশে ঋণ গ্রহণকারী পরিবারের সংখ্যা ৭ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সারা বিশ্বে পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে চলেছে। দেশে এখন ডলারের সংকট। এতে দেশে নিত্যপণ্যের দামও বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি বাড়ে। ফলে মানুষের খাদ্য ব্যয় বেড়েছে। বিবিএসের জরিপে সে চিত্র উঠে এসেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য থেকে দেখা যায়, গত বছর ক্রেডিট কার্ড থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। বিবিএস জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২২ সালে প্রতি পরিবারে ঋণের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০২২ সালের শেষে পরিবার প্রতি গড় ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজার ৫০৬ টাকা। ২০১৬ সালে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার ৭৪৩ টাকা। বিবিএস জরিপের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের মানুষ বেশি টাকা ধার করেছে।
দ্রব্যমূল্য বা জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিই মানুষের ঋণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। বিবিএসের এক জরিপে দেখা গেছে, শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি পরিবার ঋণগ্রস্ত। গ্রামাঞ্চলে গড়ে ৩৯.৩৫ শতাংশ পরিবার ঋণগ্রস্ত। আর শহরাঞ্চলে এই সংখ্যা গড়ে ৩২.১১ শতাংশ। ঋণগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা শহরাঞ্চলে গড়ে ১০ শতাংশ পয়েন্ট এবং গ্রামীণ এলাকায় ৬.৫শতাংশ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে।