একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠছে কিয়েভ, ধ্বংস হচ্ছে বহু ভবন
সোমবার সকাল থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়। ধারণা করা হচ্ছে ক্রিমিয়ান ব্রিজে বিস্ফোরণের প্রতিশোধ হিসেবে এ হামলা চালানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া কিয়েভসহ ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরগুলোতে হামলা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু সোমবার আবারও কাঁপছে কিয়েভ। এছাড়া হামলা চলছে লিভিভ, দনিপার, টার্নিপোল, ক্রেমেচুটস্কি, খারকিভ, সুমি, ঝিতোমির ও রিভাইনসহ বেশ কিছু শহরে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি শহর বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে। এখন পর্যন্ত মোট আট বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুর খবর দিয়েছে ইউক্রেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৪ টি ।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো আজ সকালে তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘোষণা দেন। তিনি নগরবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার আহ্বান জানান। সবাইকে রাজধানীতে না যাওয়ার অনুরোধও জানান তিনি।
অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রীর উপদেষ্টা আন্তন গেরাশেঙ্কো বলেছেন যে হামলাটি ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিসের (এসবিইউ) অফিসকেও লক্ষ্য করে। তিনি টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন যাতে দেখা যাচ্ছে কিয়েভের কেন্দ্র থেকে আকাশে ধোঁয়া উড়ছে। হামলায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এছাড়াও, কিয়েভে পাতাল রেল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত ভূগর্ভস্থ স্টেশন আশ্রয়কেন্দ্র হিসাবে কাজ করছে।
প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও একটি টেলিগ্রাম পোস্টে ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যবশত এসব হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। রাশিয়ানরা আমাদের ধ্বংস করতে চায় এবং পৃথিবীর মুখ থেকে আমাদের মুছে ফেলতে চায়। হামলার বিষয়ে রাশিয়া এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। কিয়েভে হামলা বন্ধ হলেও আরও ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইউক্রেন। একটানা সাইরেন আছে। কিয়েভ এখন পর্যন্ত বেশ নিরাপদ ছিল। এমনকি কিয়েভ কেন্দ্রে এর আগে কখনো হামলা হয়নি।
এদিকে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র খারকিভের পাওয়ার প্ল্যান্টে আঘাত হানে, শহরটি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। এছাড়া সেখানে পানি সরবরাহও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শহরের মেয়র ইহার তেরেখভ। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। শহরটিতে অন্তত তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে বলে জানা গেছে। ইউক্রেনের সামরিক কমান্ডার বলেছেন, রাশিয়া সোমবার দেশটিতে মোট ৮৩টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তিনি যে মানচিত্র প্রকাশ করেছেন তাতে ইউক্রেনের অন্তত এক ডজন শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে।
সোমবার ইউক্রেনে রাশিয়ান জেনারেল সের্গেই সুরভিকিনের প্রথম দিন ছিল। এই দিনে তিনি যুদ্ধে নতুন গতি এনেছিলেন। রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে ক্রিমিয়ার সেতুতে হামলা ছিল একটি লাল রেখা। রাশিয়ার গণমাধ্যম এখন বলছে, ক্রিমিয়ান সেতুতে হামলার ঘটনায় মস্কো সামান্য প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।