ট্রাম্প-কমলা বিতর্ক: হ্যান্ডশেকে শুরু, ভয়ঙ্কর নেতা আখ্যায়িত করে শেষ
আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছেন। যেখানে হ্যান্ডশেক দিয়ে বিতর্ক শুরু হয়ে একে অপরকে ভয়ঙ্কর নেতা আখ্যা দিয়ে শেষ হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় মঙ্গলবার (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টা) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় আমেরিকান সম্প্রচারকারী এবিসি নিউজ এই বিতর্কের আয়োজন করে। বিতর্কটি পরিচালনা করেছিলেন ডেভিড মুইর এবং লিনসে ডেভিস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এই প্রথম কমলা ও ট্রাম্প সরাসরি বিতর্কে অংশ নিলেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা বিতর্কের মঞ্চে পৌঁছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন। দুজনে হাত মেলান । এরপর কমলার বক্তব্য নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
অর্থনীতি নিয়ে শুরু হয়েছে কমলা-ট্রাম্প বিতর্ক। পরে স্বাস্থ্যসেবা, গর্ভপাতের অধিকার, অভিবাসন, ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আফগানিস্তান পরিস্থিতিসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ইস্যুতে দুই নেতার মধ্যে সংঘর্ষ হয়। দেড় ঘণ্টার এই বিতর্কে তারা একে অপরকে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ করার চেষ্টা করেন । যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে এ বিতর্কে মুখোমুখি হন তারা।
খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হ্যান্ডশেক নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এবং এটি শেষ হয় প্রার্থীদের একে অপরকে ভয়ঙ্কর নেতা বলার মধ্য দিয়ে। যেখানে তারা একে অপরকে নির্বাচন করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন।
হ্যারিস এবং ট্রাম্পের মধ্যে মঙ্গলবারের বিতর্ক ৯০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল। যেখানে তাদের বিতর্ক রাজনৈতিক না হয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণে ভারী ছিল।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিতর্কের সময় ট্রাম্প হ্যারিসকে একজন বামপন্থী প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলেন। ট্রাম্পের মতে, হ্যারিস উন্মুক্ত সীমান্ত নীতি অনুসরণ করবেন, ফ্র্যাকিং নিষিদ্ধ করবেন এবং জনগণের বন্দুক বাজেয়াপ্ত করবেন।
ট্রাম্প তার বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে যোগাযোগের জন্য হ্যারিসকে চাপও দিয়েছিলেন। একই সময়ে হ্যারিস-বাইডেনকে একই ধরনের রাজনীতিবিদ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এদিকে বিতর্কে ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করেন কমলা হ্যারিস। তিনি বলেন, বিশ্ব নেতারা ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে হাসেন’। এমনকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ট্রাম্পকে তার ‘লাঞ্চে’ ‘খাবেন’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
বিতর্কে, ট্রাম্প জো বাইডেনেকে অনুপস্থিত রাষ্ট্রপতি হিসাবে সমালোচনা করেন এবং হ্যারিস পাল্টা আঘাত করেন। কমলা বলেন “আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে দৌড়াচ্ছেন না, আপনি আমার বিরুদ্ধে দৌড়চ্ছেন,”।
এদিকে এবারের মার্কিন নির্বাচন তুমুল আলোচিত। অনেক পট -পরিবর্তনও হয়েছে। প্রাথমিকভাবে, তীব্র সমালোচনার মুখে বাইডেন প্রার্থীতা ছাড়তে বাধ্য হন। পরে তার জায়গায় আসেন কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে এক সমাবেশে হামলার শিকার হন ট্রাম্প। হামলাকারীর গুলিতে প্রাণে বেঁচে যান ট্রাম্প। এমন পরিস্থিতিতে কমলা হোয়াইট হাউসে প্রথম নারী হবেন নাকি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হবেন সেটাই দেখার।
দেখা গেছে, ৯৫ বছর বয়সী কমলা হ্যারিস উইসকনসিন, মিশিগান এবং পেনসিলভেনিয়ায় অল্প ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তবে নির্বাচনের ফলাফলে পাল্টে যেতে পারে চার রাজ্যে দুই জনের অবস্থান। নেভাদা, জর্জিয়া, উত্তর ক্যারোলিনা এবং অ্যারিজোনার কুয়াশাচ্ছন্ন রাজ্যগুলিতে প্রার্থীর অবস্থান নির্বাচনে একটি বড় পার্থক্য তৈরি করে দিতে পারে।