ছোটখাটো ভুল ধরতেও বিশ্ব মিডিয়ায় সরব: তবে নির্বাচনি লড়াইয়ে অনড় বাইডেন
বড় ব্যক্তির ছোট ভুলও অনেক সময় বড় করে দেখা হয়। যেটা ঘটছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট । সদা সদালাপী, মিষ্টিভাসি, মৃদুভাসি এবং আক্রমাত্মক কথা না বলার এক মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী । এই ব্যক্তিটির ছোটখাটো ভুল ধরতেও এখন বিশ্ব মিডিয়া সরব।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের নামের সাথে তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আবারও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। বাইডেন এর আগেও ভুল করেছেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলে ভুল করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলেনস্কি বলেছেন তিনি পুতিনের চেয়ে ভালো।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে কমলা হ্যারিসের কথা বলতে গিয়ে তিনি কমলার নামের পরিবর্তে ট্রাম্প ব্যবহার করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর ৭৫ তম সম্মেলনের শেষে বাইডেন একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ট্রাম্পের নাম গুলিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সম্মেলনে, রয়টার্স বাইডেনকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে কমলা হ্যারিসের উপর তার আস্থা আছে কিনা। জবাবে তিনি বলেন, দেখুন, প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতা না থাকলে আমি ট্রাম্পকে (কমলা) ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিতাম না।
এর আগে, দুই সপ্তাহ আগে ৭৮ বছর বয়সী প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বিতর্কে ফেঁসে যাওয়া বাইডেন ইতিমধ্যে দলের ভিতরে এবং বাইরে চাপের মধ্যে রয়েছেন। সমর্থক, তহবিল এবং এমনকি গণতান্ত্রিক নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন যে তিনি ৫ নভেম্বরের নির্বাচনে আদৌ জিততে পারবেন কিনা। তারা ৮১ বছর বয়সী বাইডেনকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছে। মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের ২১৩ জন ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কমপক্ষে ১৬ জন এবং সিনেটের ৫১ জন ডেমোক্র্যাটের মধ্যে একজন ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে বাইডেনকে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। বাইডেনের প্রেস কনফারেন্সের ঠিক পরে, কানেকটিকাট রাজ্যের প্রতিনিধি জিম হিমেসও ওই কাতারে যোগ দিয়েছেন। তবে ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নেওয়া কোনো দেশের নেতাই বাইডেনকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বা তার সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে বাইডেনের সঙ্গে আমার দীর্ঘ কথা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি সবসময় একজন দায়িত্বশীল রাষ্ট্রপতিকে দেখেছি যিনি বিভিন্ন বিষয়ে সুপণ্ডিত।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজও একই সুরে প্রতিধ্বনিত হয়েছেন। তিনি বলেন, বাইডেন আমাদের সাধারণ জোটের নেতৃত্ব প্রমাণ করেছেন। জেলেনস্কিকে বাইডেনের পুতিন বলে সম্বোধন করা নিয়েও কথা বলেন শলৎজ। তিনি বলেন, মুখ ফসকে কথা বেরিয়ে যেতেই পারে, যদি আপনি সবার ওপর নজর রাখেন, আপনি অনেক কিছু খুঁজে পাবেন।
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও বাইডেনের পক্ষে রয়েছেন। তিনি বলেন, বাইডেনের নেতৃত্ব নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে তা ভুল। ওভাল অফিসে বাইডেনের সঙ্গে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আলোচনা করে তিনি বলেন, বাইডেন সব দিক থেকেই যোগ্য।