November 24, 2024
বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আফগানিস্তানের ইতিহাস

আফগানিস্তানের প্রথম বিশ্বকাপ জয় ছিল ২০১৫ সালে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। আরও ১৪ টি ম্যাচ খেলার পরও রশিদ বাহিনী কোনো জয় পায়নি। অবশেষে আজ ইতিহাসের দ্বিতীয় জয় পেল আফগানরা। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে তারা। আফগানিস্তান জিতেছে ৬৯ রানে।

রবিবার দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৪৯.৫ ওভারে ২৮৪ রান করে আফগানরা। বড় হতে পারলেও মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কিন্তু এই সংগ্রহই তাদের জয়ের জন্য যথেষ্ট, রশিদ-নবিকে সামলাতে ব্যর্থ ইংলিশরা ৪০.৩ ওভারে মাত্র ২১৫রানে ভেঙে পড়ে।

কিন্তু ম্যাচ শুরুর আগে ভাবা হয়েছিল উল্টো। আগের দুইবারের মতো আফগানিস্তানকে পাত্তা দেবে না ইংল্যান্ড। এছাড়া প্রথম দুই ম্যাচে ভারত-বাংলাদেশের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণের পর এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিল কল্পনার মতো। আত্মবিশ্বাস তলানিতে থাকা উচিত! কিন্তু তারা তো রূপকথা লিখেছে!

ফারুকি দ্বিতীয় ওভারে বেয়ারস্টোকে (২) ফেরত পাঠিয়ে স্কোরের সূচনা করেন এবং সপ্তম ওভারে জো রুটকে ফেরান মুজিব; তখন আফগানরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। সেখানে মনে হয়, আজ অসম্ভবই হয়তো সম্ভব! ১৭ বলে ১১রান করে ফেরেন রুট। দলের মোট রান তখন ৩৩/২।

ডেভিড মালান কোনো বিপদ না দেখে পাওয়ার প্লেট নিয়ে যান হ্যারি ব্রুকের কাছে। কিন্তু বিপদ তখনো কাটেনি। ১৩তম ওভারে মালানকে ফেরত পাঠান নবী। ৩৯ বলে ৩২ রান করে আউট হন মালান। বিপদে ত্রাণকর্তা হতে পারেননি ইংলিশ অধিনায়ক। ১৮ বলে ৯ রান করে তার স্ট্যাম্প ভেঙে দেন নবীন উল হক।

হ্যারি ব্রুককে ছেড়ে দ্রুত ফিরে আসেন লিয়াম লিভিংস্টোন এবং স্যাম কুরান। রশিদ লিভিংস্টোনকে ফিরিয়ে দেন, করণ নবীর কাছে পড়েন। দুজনের ব্যাটেই ১০ রান। ইংল্যান্ড ২৭.১ ওভারে মাত্র ১৩৮ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছে।

একপাশে ব্যাট করা ব্রুককে তুলে নেন মুজিব। ফেরার আগে ৬১ বলে ৬৬ রান করেন তিনি। আদিল রশিদ ও মার্ক উড ১৬৯ রানে 8 উইকেট হারিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের ২৯ রানের ব্যবধান কমিয়ে দেয়। রশিদ করেন ২০ রান, ১৮ রান আসে উডের ব্যাট থেকে। ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন টপলি।

মুজিবুর রহমান ও রশিদ খান ৩টি করে উইকেট নেন। দুই উইকেট পান নবী।

এর আগে ইনিংসের শুরুতেই ইংল্যান্ডকে বোলিং করে আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মনে ভয় জাগিয়ে তোলেন। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের দিকে মনোনিবেশ করেন। তাদের জন্য ইংরেজি পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।

উদ্বোধনী জুটিতে আফগানরা দুর্দান্ত। পাওয়ার প্লেতে ৭৯ রান যোগ করেন তিনি। যেখানে গুরবাজের বড় অবদান, তিনি মাত্র ৩৩ বলে ফিফটি তুলে নেন। দ্রুত তিন অঙ্কের ঘর ছুঁয়ে ফেললেন।

আদিল রশিদ এই ভয়ানক দ্বৈত বন্ধন ছিন্ন করেন। ইব্রাহিম জাদরানকে ফিরিয়ে আনুন। ততক্ষণে ১৬.৩ ওভারে ১১৪ রান এসেছে। ৪৮ বলে ২৮ রান করে আউট হন ইব্রাহিম। পরের ওভারে রহমত শাহকে (৩) ফেরান রশিদ। ম্যাচে ফিরেছে ইংলিশরাও।

পরের গল্পটা পুরনো স্ক্রিপ্টের মতো। দারুণ শুরুর পর আবারও চোখের পলকে ভেঙে পড়ে আফগানিস্তানের মিডল অর্ডার। ১২২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯০ রান। এ সময় গুরবাজও ফিরে আসেন যিনি ধ্বংসাত্মক হয়েছিলেন। তার দুর্দান্ত ইনিংস চাপে পড়ে রান আউটে।

বাটলারের থ্রোতে ফেরার সময় তার নামের পাশে ছিল ৫৭ বলে ৮০ রান। সেঞ্চুরি না পেলেও চোখে লেগে থাকবে তার ইনিংস। ওকস-কুরানকে পাত্তা না দিয়ে তারা যেভাবে ইনিংস সাজিয়েছে, ইংল্যান্ড দল নিশ্চয়ই তা অনেকদিন মনে রাখবে।

আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শাহিদিও ব্যর্থ হন, ৩৬ বলে ১৪ রান করে ফিরে যান। দারুণ ছন্দে থাকা আজমতুল্লাহ ওমরজাই ইনিংস টানতে পারেননি, তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৯ রান। ব্যাট হাতে এখনও কার্যকারিতা ধরে রাখতে পারেননি মোহাম্মদ নবী, আউট হন মাত্র ৯ রানে। আফগানরা ৩৬.১ ওভারে ১৯০ রানে ৬ উইকেট হারিয়েছে।

আরও পড়ুন

হার্ভার্ডের শিক্ষককে কোরআন উপহার দিয়েছেন পাকিস্তানের তারকা ক্রিকেটার রিজওয়ান

ইকরাম আলী ও রশিদ খান ইনিংস টেনে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু এবার বাধা দিলেন আদিল রশিদ। দুজনের ৪৩ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। রশিদকে ফেরান রশিদ, আফগান রশিদের ব্যাট থেকে ২২ বলে ৩৩ রান আসে।

মুজিবুর রহমানও এদিন তার ব্যাটিং প্রতিভা দেখিয়েছিলেন। ইকরামের সঙ্গে যোগ করেন মাত্র ২৫ বলে ৪৪ রান। ইকরাম ৬২ বলে ৫৮ রান করেন। ১৬ বলে ২৮ রান করে ফেরেন মুজিব। শেষ পর্যন্ত ১ বল বাকি থাকতে ১৮৪ রানে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান।

ইংল্যান্ডের হয়ে আদিল রশিদ ৩টি ও মার্ক উড নেন ২টি উইকেট।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X