স্বাধীন বাংলাদেশে পালিত হলো নতুনভাবে ঐতিহ্যবাহী ঈদ
ফ্যাসিস্ট-খুনি হাসিনা আর আ’লীগ মুক্ত বাংলাদেশে এই প্রথম প্রায় শত বছরের পুরানো রীতিকে সামনে এনে নতুনভাবে ঐতিহ্যকে লালন করে ইতিহাসের নতুন সাজে ২০২৫ সালের ঈদ পালন করলেন মানুষ। এই ঈদ ছিল অত্যন্ত আনন্দের এবং স্বাধীনতার। যেখানে মানুষ কথা বলতে পেরেছে, ঐতিহ্যবাহী ঈদ মিছিল করতে পেরেছে ,সকল ধরণের মানুষ তাদের মনের আকুতি মেলে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পেরেছে। ছিল আবু সাঈদ মুগ্ধসহ সকল শহীদদের স্মরণে শহীদি গানের অশ্রু জড়ানো আনন্দ মিছিল। সবই যেন মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় ঘটে যাওয়া ছাত্ৰ-জনতার ২০২৫ সালের জুলাই বিপ্লবের ফসল।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘ঈদ হোক আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। চিরাচরিতভাবে ঘরে বসে, কিংবা টিভি দেখে যেন ঈদের মতো উপলক্ষ নষ্ট না হয় এবং একই সঙ্গে আমাদের শত বছরের ঈদ মিছিলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যেই আয়োজন করা হয় ঈদ আনন্দ উৎসব-২০২৫।’
সোমবার বিকেলে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন সম্প্রতি কখনো না হওয়ায় এবারের ঈদ মিছিল আমাদের জন্যও ছিল একটা লার্নিং। আগামীতে আরো আনন্দমুখর এবং বর্ণাঢ্যভাবে করা হবে এই আয়োজন। এবারের আয়োজনের ব্যাপারে আপনাদের সব ফিডব্যাক আমলে নিয়ে আরো সুন্দর ঈদ মিছিল আয়োজন করা হবে।’
এই তরুণ উপদেষ্টা বলেন, “তবে লাখো মানুষের অংশগ্রহণ এবং সীমাহীন আনন্দের সঙ্গে উদযাপন আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, স্থানীয় সরকার বিভাগ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সবার ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে এত স্বল্প সময়ে এই আয়োজন সফল করা সম্ভব হয়েছে”।
ভবিষ্যতে আমরা আরও বৃহত্তর পরিসরে ঈদ উৎসব আয়োজন করব: আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবা য় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আমরা বলেছি যে, ভবিষ্যতে আরও বৃহত্তর পরিসরে ঈদ উৎসব আয়োজন করা হবে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “সবাইকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা। আজকের এই আনন্দের দিনে আমি মনে করতে চাই সেসব শহীদ ভাইদের কথা, যাদের কারণে আজকের ঈদ এতো আনন্দময় হয়েছে। তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজ শতবর্ষী ঈদ উদযাপনের যে ঐতিহ্য, তা আয়োজন করা সম্ভব হয়েছে। আগামী বছরও একইভাবে আমরা নগরবাসী ঈদ উদযাপন করব।“
উপদেষ্টা আরও বলেন, “ঈদের দিন ঘরে বসে আমাদের আর ঈদ উদযাপন করতে হবে না। আমরা ঈদ আনন্দ করব, ঈদ মিছিল করব। একে অপরের সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেব। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে ঈদ উৎসবের আয়োজন করব “।
এর আগে, সকাল ৯টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠের সামনে ঈদ আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে ঈদ আনন্দ উৎসব শুরু হয়। শোভাযাত্রার পর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় । শিল্পীরা ঈদের গান পরিবেশন করেন। বাউল শিল্পীদের পরিবেশনা ছিল সেখানে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সময় সাধারণ জনগণকে বিনোদন দেওয়া হয় । সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করার পাশাপাশি, এই সময়ে সাধারণ জনগণ ঈদের সেমাই, মিষ্টি এবং বাতাসা খেতে পেরেছেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত এই ঈদ আনন্দ উৎসব দুই দিন ধরে চলবে। এর অংশ হিসেবে, ঈদের দিন এবং পরের দিন আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের উদ্যোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের ২০০ টিরও বেশি স্টল থাকবে। উভয় দিনই মেলা সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। মেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য একটি নাগরদোলা থাকবে। খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্রীড়া সরঞ্জাম রাখা হবে।