আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন মেধাবী ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ
উন্নত ক্রিকেটের অন্যতম পথিকৃৎ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ,মোহাম্মদ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৬সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণকারী একজন বাংলাদেশী অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার ব্রিলিয়ান্ট ক্রিকেটার। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন সিনিয়র সদস্য। রিয়াদ একজন অলরাউন্ডার, কার্যকর মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং মাঝে মাঝে অফ-স্পিন বোলার হিসেবে দলের হয়ে খেলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক ছিলেন। ২০০৭ সালের জুলাই মাসে শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য তাকে বাংলাদেশ দলে ডাকা হয়েছিল। সেই সফরের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে তিনি অভিষেক হন । তিনি ক্রিকেট বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি (১০৩) করার গৌরব অর্জন করেন। বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করা প্রথম বাংলাদেশী ক্রিকেটার হওয়ার গৌরবসহ তিনি আরও অনেক সম্মান অর্জন করেন।
মুশফিকুর রহিম কিছুদিন আগে ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় জানান। তারপর থেকেই গুঞ্জন ছিল যে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন? অবশেষে, সেই গুঞ্জন সত্যি হলো। এই অভিজ্ঞ বাংলাদেশী ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এক আবেগঘন বার্তায় তিনি লিখেছেন,‘সমস্ত প্রশংসা শুধুমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহর। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি তার সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষ করে তার ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আমার সব সতীর্থ, কোচ এবং বিশেষভাবে আমার ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছেন।’
তার পরিবারের অবদান তুলে ধরে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘একটা বড় ধন্যবাদ আমার বাবা-মা, শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের, বিশেষ করে আমার শ্বশুরকে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমার ভাই এমদাদ উল্লাহকে, যিনি শৈশব থেকে আমার পাশে ছিলেন, আমার কোচ ও মেন্টর হিসেবে।’
তার স্ত্রী এবং সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সবশেষে ধন্যবাদ আমার স্ত্রী ও সন্তানদের, যারা সবসময় আমার পাশে ছিল, ভালো ও খারাপ সময়ে আমার সহায়তা করেছে। আমি জানি, রায়েদ আমাকে লাল-সবুজ জার্সিতে মিস করবে।’
বাস্তবতার অংশ হিসেবে অবসরের সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়ে মাহমুদউল্লাহ বলেন, ‘সবকিছু সবসময় পারফেক্টভাবে শেষ হয় না, তবে আপনাকে সেটা মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। শান্তি… আলহামদুলিল্লাহ।’
তিনি তার জাতীয় দল এবং দেশের ক্রিকেটের মঙ্গল কামনা করে বলেন, ‘আমার দল ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য রইল শুভকামনা।’
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করার আগে, প্রাক্তন অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং মাশরাফি বিন মুর্তজাও কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরে আসেন। মাশরাফি আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় না জানালেও, গত জানুয়ারিতে তামিম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন মুশফিকুর।ম
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এর আগে তিনি টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন। কেবল ওয়ানডে বাকি ছিল। বুধবার রাতে (১২ মার্চ) তার যাচাইকৃত ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই খবরে রয়েছেন। অভিজ্ঞ টাইগার ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টিতে ব্যাট করতে না পারার জন্যও সমালোচিত হয়েছিলেন। সেই কারণেই ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের জন্য তাকে দলে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই শোনা যাচ্ছিল যে, রিয়াদ ভারত সিরিজে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণকে বিদায় জানাবেন।
তিনি ২০২১ সালের জুলাই মাসে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। সেই অবসর নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছিল। কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি, তবে হারারে টেস্টের মাঝখানে সতীর্থদের গার্ড অফ অনার দেওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ কী বলবেন তা সকলেই অনুমান করতে পেরেছিলেন। এরপর, মাহমুদউল্লাহ দীর্ঘক্ষণ কিছু বলেননি। তখন সেই অবসর নিয়ে একটি রহস্যের জন্ম হয়েছিল। তবে এবার সব প্রশ্নের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে বিদায় নিলেন এই মেধাবী ক্রিকেটার।
সময় উপযোগী অলরাউন্ডারকে বাংলাদেশে কখনো ভুলবেনা। এবং সকল মানুষ চাইবে ক্রিকেট খেলা থেকে বিদায় নিলেও তাঁর ক্রিকেট সম্পৃক্ততা যেন থেকে যায় । এবং বাংলাদেশের আগামীর ক্রিকেটকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। সেভাবে মাহমুদুল্লাহ সামনের দিকে অগ্রসর হবে এটাই ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশা।