March 4, 2025
ইউএনও অফিসে তার সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে বেধড়ক মারধর করলো বিএনপির চাঁদাবাজ নেতারা

ইউএনও অফিসে তার সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে বেধড়ক মারধর করলো বিএনপির চাঁদাবাজ নেতারা

ইউএনও অফিসে তার সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে বেধড়ক মারধর করলো বিএনপির চাঁদাবাজ নেতারা

ইউএনও অফিসে তার সামনেই ৪ জামায়াত নেতাকে বেধড়ক মারধর করলো বিএনপির চাঁদাবাজ নেতারা

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সামনে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে বেধড়ক মারধর করেছেন বিএনপির চাঁদাবাজরা। অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করার জন্য ইউএনওকে মারধর করার চেষ্টা করলে জামায়াত নেতারা তাকে থামিয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে চাঁদাবাজিতে এক্সপার্ট বিএনপি নেতারা তাদের মারধর করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

সোমবার (৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

মজলুম চার জামায়াত নেতা হলেন- উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই-আজম, সম্পাদক টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস, সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চার জামায়াত নেতা কোনও কাজে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ইউএনও অফিসে যান। ইউএনও অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় তারা অফিস কক্ষে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী সেখানে যান। তারা ইউএনওর কাছে জানতে চান কেন বালি উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। জামায়াত নেতাদের ইতিমধ্যেই সেখানে বসে থাকতে দেখে তারা রেগে যান এবং বলেন, ‘এরা এখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে আছে কেন?’ এই বলে বিএনপি নেতারা ইউএনও কক্ষ থেকে বেরিয়ে আরও কয়েকজনকে ডাকেন।

পরে বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান, বাবু খান, মানিক খান, আব্দুল বাশেদ, আরিফ শেখসহ ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী ইউএনও কক্ষে প্রবেশ করে জামায়াত নেতাদের মারধর, ঘুষি ও লাথি মারতে শুরু করেন। পরে জামায়াত নেতাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে, জামায়াত নেতাদের মারধরের ঘটনায় উপজেলাজুড়ে তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ঘটনার পর জামায়াত উপজেলা আমীর কেএম হেসাব উদ্দিনসহ কয়েকশ নেতাকর্মী ইউএনও কার্যালয়ে ছুটে যান এবং ঘটনার প্রতিবাদ করেন। এ সময় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়।

বিকাল ৫:৩০ টা পর্যন্ত ইউএনও, বিএনপি ও জামায়াত নেতারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে, ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বিষয়টি নিয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম বিশ্বাস, সদস্য সচিব শেখ আব্দুর রউফ এবং যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমানের সাথে আলোচনা করা হয়। তারা বলেন, ‘আজকের ঘটনার সাথে যারা জড়িত, এই সন্ত্রাসীরা আমাদের দলের হতে পারে না। আমরা বলেছি যারা অপরাধী তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।’

সুজানগর উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক কে এম হেসাব উদ্দিন বলেন, ‘সুজানগরে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য ইউএনওকে মারধর করে চাঁদাবাজি  ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিল এই বিএনপি ক্যাডাররা। সেই সময়, জামায়াত নেতারা তাদের বাধা দিলে তারা আমাদের চার নেতাকে বেধড়ক মারধর করে। তারা ইউএনওকে বেশ কয়েকবার মারধর করার চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। পরে, যখন তারা তাকে মারতে না পেরে তারা তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। তিনি বলেন, বিএনপির কারণে  সরকারি অফিসেও আমাদের নেতা-কর্মীদের কোনও নিরাপত্তা নেই।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে এই নেতারা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির গডফাদার হয়ে উঠেছেন। চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন, মাদক ব্যবসা, চুরি, ডাকাতি, অপহরণ ও ডাকাতি থেকে শুরু করে সকল ধরণের অপরাধ করার পরেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যদি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা সাংগঠনিকভাবে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

জানতে চাইলে সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আহতরা এখনও মামলা করতে আসেননি। তারা আসার সাথে সাথে মামলা দায়ের করা হবে। যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক। যেহেতু আমার   অফিসে  মারধরের ঘটনা ঘটেছে এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও জনুন

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X