January 9, 2025
কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারত থেকে দখলমুক্ত করলো বিজিবি

কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারত থেকে দখলমুক্ত করলো বিজিবি

কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারত থেকে দখলমুক্ত করলো বিজিবি

কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারত থেকে দখলমুক্ত করলো বিজিবি

বাংলাদেশ হলেও যুগ যুগ ধরে কোদলা নদীর প্রায় ৫ কিলোমিটার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সোমবার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দাবি করেছে, এলাকাটি ‘মুক্ত’ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী কোদলা নদীর ৫ কিলোমিটার ভারতীয় দখল থেকে উদ্ধার করেছে মহেশপুর-৫৮ এর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এতদিন পর্যন্ত কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের এই ৫০ কিলোমিটার ভারতীয় বিএসএফের দখলে এবং আধিপত্য ছিল। সোমবার রাতে ৫৮ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজিবি জানায়, কোদলা নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়েছে এবং মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালে আঁকা বাংলাদেশ-ভারত (STEEP Map Sheet Number-৫১) মানচিত্র অনুযায়ী, কোদলা নদীতে উল্লেখিত ৪.৮০ কিলোমিটার নদীটি সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার ভিতরে রয়েছে।

মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের স্থানীয়রা জানান, এক সময় এ নদী থেকে প্রচুর মাছ আহরণ হতো। স্বাধীনতার পর যখন কোদলা নদীর তীরের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরও বসবাস শুরু করে, তখন ভারতীয় বিএসএফ কোদলা নদীর বাংলাদেশের অংশ দখল করে সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে নদীতে চাষাবাদ ও মাছ ধরার জন্য কৃষকরা মাঠে যেতে পারছে না।

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দিন জানান, কোদলা নদীর বাংলাদেশ অংশে লোকজন গেলেই বিএসএফ বাধা দিত। এটি প্রায়ই নদী ব্যবহার নিয়ে মাটিলা গ্রামের লোকজন এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ’র সাথে প্রায়ই বাদানুবাদ হতো।

মহেশপুর ৫৮ বিজিবি জানায়, সম্প্রতি কোদলা নদীর প্রকৃত মালিকানার বিষয়টি বিজিবির নজরে এলে তারা প্রথমে বিভিন্ন নথিপত্র, স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীর প্রকৃত অবস্থান নিশ্চিত করে এবং অবৈধ আধিপত্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। বিএসএফ বিজিবি সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব দিয়ে কোদলা নদী তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে, বিজিবি সদস্যরা এলাকার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি নদীর তীরে দ্রুত টহল দেওয়ার জন্য মোটরচালিত নৌকা এবং অল-টেরেন ভেহিকেল (এটিভি) বরাদ্দ করেছে।

এদিকে নদীর ৫ কিলোমিটার ভারতীয় দখল থেকে উদ্ধারের পর সোমবার বিকেলে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শাহ মোঃ আজিজুস শহীদ স্থানীয় লোকজনের সাথে মতবিনিময় করেন।

এ সময় বিজিবি কর্মকর্তারা নদী উদ্ধারে সহায়তার জন্য জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী প্রজন্মকে নদীর প্রকৃত অবস্থান ও মালিকানা সম্পর্কে অবহিত করার অনুরোধ জানান। নদীটির বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ ও চাষাবাদ অব্যাহত রাখার জন্য বিজিবি কর্মকর্তারা গ্রামবাসীদের অনুরোধ করেন।

আগে নদীতে নেমে মাছ ধরলে বিএসএফ তাদের এলাকার লোকজনকে ভয় দেখাত। বিজিবি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তারা স্বাভাবিকভাবে নদীতে নামতে পারবে । কোদলা নদীর উপর বাংলাদেশের ‘দখল’ প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় স্থানীয়দের আনন্দ উপভোগ করতে দেখা গেছে।

তাদের মধ্যে একজন ভাগচাষী আলমগীর বলেন, “এখন থেকে নদীতে বাংলাদেশের অংশে নিয়মিত মাছ ধরা সম্ভব হবে এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালিত হবে ভালোভাবে । আগে বিএসএফ আমাদের এই নদীতে ঢুকতে দিত না।”

আরো পড়তে

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X