উপমহাদেশের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই বাংলাদেশের একটিও
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আজম বলেন, ভালো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ভারতে ভালো বিশ্ববিদ্যালয় আছে। উপমহাদেশের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করুন, এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করুন। ভারতে ২০টি আছে, আপনার (বাংলাদেশের ) একটিও নেই। পাকিস্তানের ১০/১২টা আছে; আপনি লজ্জা পান তো!
জাতীয় প্রেসের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খান হলে কাউন্সিল ফর দ্য রাইটস অব একাডেমিয়া আয়োজিত ‘‘বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে একাডেমিক অধিকার লঙ্ঘন : প্রতিকারে নীতি সুপারিশ’: প্রতিকারের জন্য নীতি সুপারিশ’ শীর্ষক আলোচনায় বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।
শিক্ষা খাতে বাজেট বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, “কিছু মনে করবেন না। আমাদের প্রাইমারি স্কুলে অত্যন্ত খারাপ শিক্ষকরা পড়ান। কারণ সেখানে বেতন খুবই কম। ১৭ হাজার টাকায় আপনি কী ডিজার্ভ করেন?
মোহাম্মদ আজম বলেন, বাজারটা একটু দেখবেন, তাদের (ভারত-পাকিস্তান) মাস্টারদের কী পরিমাণ টাকা দেয়। তাদের এনুয়াল বাজেট কত। তাহলে শিক্ষার জন্য আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি বেইজে আলাপ করতে হবে। আমার মনে হয় আগামী পাঁচ বছরে এটা সম্ভব। আপনি কীভাবে এটাকে বাড়িয়ে বাড়িয়ে কীভাবে তাদের মতো করা সম্ভব সেটার একটা রোডম্যাপ দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১/২টি বিশেষ ইনস্টিটিউট করে ফুলটাইম ফুল ফান্ডেড পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করতে হবে। বাংলাদেশে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। বাংলাদেশে মূলত কোন পিএইচডি প্রোগ্রাম নেই। এখানে একজন ভর্তি হয় এবং তিন বছর পর একটি কাগজ জমা দেয়, এটাই। একটি পূর্ণ-সময়ের সম্পূর্ণ অর্থায়িত পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু করা দরকার এবং এটি সম্ভব। দুই-তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা করার জন্য আমাদের জনবল আছে।
এ সময় মাদ্রাসা শিক্ষাকে মূলধারার শিক্ষা বলা উচিত বলেও মন্তব্য করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক।
আলোচনা সভা থেকে সংগঠনের মুখপাত্র প্লাবন তারিক ১২ দফা শিক্ষা সংস্কারের প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবগুলো হলো-
১.শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন;
২. শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন;
৩. মূল্যায়ন পদ্ধতির সংস্কার;
৪. শিক্ষা বাজেট অগ্রাধিকার;
৫. গবেষণামুখী উচ্চশিক্ষা;
৬. নিয়োগ কমিশন প্রণয়ন;
৭. মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার;
৮. কারিগরি শিক্ষার মান বৃদ্ধি;
৯. শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর;
১০. মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও কাউন্সেলিং ব্যবস্থা করা;
১১. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং
১২. বুলিং ও র্যাগিং বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
কাউন্সিল ফর দ্য রাইটস অফ অ্যাকাডেমিয়ার সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল মাহমুদের পরিচালনায় আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক মুশতাক খান, অর্থনীতি বিভাগের, স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের; অধ্যাপক মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন, সিনেট সদস্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; এবং এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসিম।