December 11, 2024
কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ ব্যবসায় চলছে চরম হাহাকার

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ ব্যবসায় চলছে চরম হাহাকার

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ ব্যবসায় চলছে চরম হাহাকার

কলকাতার ‘মিনি বাংলাদেশে’ ব্যবসায় চলছে চরম হাহাকার

অন্যতম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার দেশ ভারত। অনর্থক বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়াতে ছড়াতে উস্তাদি করতে চাচ্ছে । আর তার খেসারত গুনতে হচ্ছে তাদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরকে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত মিনি বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের অবস্থা চরমে।

কলকাতার নিউমার্কেট, মারকুইস স্ট্রিট এলাকা অনেক বাংলাদেশি মানুষের কাছে খুবই পরিচিত এলাকা। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে এই এলাকায় অনেক হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে, যেগুলো মূলত তাদের ব্যবসার জন্য বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভর করে। কয়েক মাস আগেও এই এলাকায় বাংলাদেশ থেকে মানুষ ভিড় করত। তা ছাড়া বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য মানি এক্সচেঞ্জ ও বাস কাউন্টারসহ প্রায় সব ধরনের সেবা ওই এলাকায় পাওয়া যায়। ওই এলাকায় গেলে মনে হবে না ঢাকার বাইরে অন্য কোনো শহরের রাস্তা।

কিন্তু গত জুলাই মাস থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে অস্থিরতা এবং পরবর্তীতে  শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে  চলে যাওয়ায় কলকাতা প্রায় বাংলাদেশি পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছে। এবং আগস্ট থেকে, এটি এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে।

কয়েক মাস আগে, হোটেলের অকুপেন্সি রেট ছিল ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ। এখন তা নেমে এসেছে মাত্র ৩০ শতাংশে।
রুম অকুপেন্সি রেট হল হোটেল ব্যবসার একটি শব্দ, যা একটি হোটেলের মোট কক্ষের কত শতাংশ মানুষ বরাদ্ধ করে তার হিসাব।
অর্থাৎ হোটেলে ১০০ টি কক্ষ থাকলে এখন মাত্র গড়ে ৩০ টি কক্ষ পর্যটকদের বরাদ্ধ হয় এখন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকার মার্কুইস স্ট্রিট ‘মিনি বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত। কারণ এই এলাকায় গড়ে ওঠা সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং হোটেল-রেস্তোরাঁগুলো মূলত বাংলাদেশি মালিকদের দ্বারা চালিত। কিন্তু সাম্প্রতিক অস্থিরতার কারণে কলকাতার এই মিনি বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বাংলাদেশিদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে। ফলে অনেককেই অর্ধেক খাওয়ার উপর জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক ব্যবসায়ী কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটের ফুটপাতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ বিক্রি করেন। কিন্তু দেখলে মনে হবে সেই বিক্রির বারোটা বেজে গেছে। কোন গ্রাহক নেই. কোন কাস্টমার নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কি হয়েছে জানেন না? সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অবস্থা। মহাজনের কাছে বেশ কিছু ঋণ বকেয়া হয়ে গেছে। মালামাল বিক্রি হচ্ছেই না।’

একই সুর শোনা গেল ফুটপাতে এক খাবার বিক্রেতার কণ্ঠেও। সন্ধ্যার পর এলাকা জমজমাট থাকতো। গত চার মাস ধরে একেবারে জনশূন্য ছিল। সম্প্রতি রিয়াজ তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করছিলেন।

যে জায়গায় পরিবর্তন ঘটেছে

মার্কুইস স্ট্রিট। কলকাতার মৌলালি থেকে নোনাপুকুরের দিকে গেলে বাঁদিকে একটা রাস্তা আছে। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। আপনি যদি সেই রাস্তা ধরে চলতে থাকেন তবে আপনি একটি মোড়ে পৌঁছে যাবেন। চৌরাস্তা পার হওয়ার সাথে সাথেই মার্কুইস স্ট্রিট শুরু হয়। কলকাতাকে অনেকেই ‘মিনি বাংলাদেশ’ বলে থাকেন। এ কথা বলার কারণ আছে। বাংলাদেশ থেকে যারা কলকাতায় আসেন তাদের বেশিরভাগই এখানে থাকেন।

এখানকার ব্যবসায়ীরাও তেমনই। বাংলাদেশিদের আসা-যাওয়াকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে তাদের ব্যবসা। কিন্তু অগাস্টের পর থেকে পাল্টে গেছে রাস্তাঘাটের জমজমাট চিত্র। বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে এবং ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এসেছেন। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এরপর থেকে ব্যবসায় ধস নেমেছে।

কী বলছেন হোটেল মালিকরা?

ফ্রি স্কুল স্ট্রিট এবং মারকুইস স্ট্রিট দ্বারা গঠিত মিনি বাংলাদেশ এলাকায় ২০০ টিরও বেশি হোটেল রয়েছে। আগস্ট থেকে তাদের বাজারে চরম মন্দা চলছে।

তিনি হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ। গত সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশিদের সংখ্যা কমেছে। আমাদের হোটেলে ৪০টি কক্ষ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে,১০-১৫ টির বেশি বরাদ্ধ হয় না। এভাবে চলতে থাকলে অনেক ব্যবসার ব্যবসা ছুটে  যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা তাদের কণ্ঠে স্পষ্ট হয়েছে।

 শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য কিছু মানুষ আসছে

হোটেল গুলিস্তানের মালিক আবারও ভারতের ট্যুরিস্ট ভিসা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, ‘পর্যটন ভিসা প্রত্যাহার করার পর থেকে গ্রাহক অনেক কমে গেছে। আমাদের ব্যবসার বেশিরভাগই বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে। এখন শুধু মেডিকেল ভিসা পাওয়ারাই এখানে আসছে। কিন্তু সেটা তাদের মানায় না। কারণ এত হোটেল আছে! সেই সংখ্যায় খুব কম লোক আছে।’

রেস্টুরেন্টগুলোতে রান্নাও কমে গেছে

শোচনীয় পরিস্থিতি শুধু হোটেল মালিকদের নয়। বরং বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে সমস্যার চিত্র স্পষ্ট। মার্কুইস স্ট্রিটের একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁ গত এক দশক ধরে ব্যবসা করে আসছে। রেস্টুরেন্ট মালিকের কথায়, ‘এই প্রথম এমন মন্দা দেখলাম। আগেও অবস্থা খারাপ হয়েছে। তবে এতটা নয়।’

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি

চলমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিদ্বেষমূলক পোস্ট বাড়ছে। এ অবস্থায় মিনি বাংলাদেশ কতটা নিরাপদ মনে করছে?

সেখানকার একটি ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস কোম্পানির এক  কর্মকর্তা  বলেন, ‘গত চার মাসে ব্যবসা তলানিতে থাকলেও আতঙ্কের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা আমরাও মানি না।

এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন হোটেল মালিক আফসার। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে হিন্দু-মুসলমানের কোনো পার্থক্য নেই। মানুষই শেষ কথা। অনেকে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এসব করে কোনো লাভ হবে না।”

হিন্দুস্তান টাইমসের অন-সাইট রিপোর্টে বলা হয়েছে, “মিনি বাংলাদেশে গিয়ে এটা পরিষ্কার যে সেখানকার ব্যবসায়ীরা মাছির মতো হয়ে গেছে। যারা ফুটপাতে ব্যবসা করেন তাদের অবস্থা আরও শোচনীয়। কারণ তাদের অনেকেরই দিন কাটছে। অর্ধেক খাওয়ায়  দিন গুজরান হলেও কিন্তু সবাই তাদের

Read More

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X