পালিয়ে ভারত গিয়েও ধর্ষণ করেছে আ.লীগ: ৪নেতা গ্রেপ্তার
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি রিপন ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ইলিয়াস আহমেদ জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে ভারতের শিলং পুলিশ।
ভারতের কলকাতা নিউ টাউন থেকে গণধর্ষণ মামলায় আওয়ামী লীগের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে শিলং পুলিশ। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে কলকাতার বিধাননগর কমিশনারেট ও মেঘালয় পুলিশের যৌথ বাহিনী নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাট থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেপ্তার করে।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে বাঁচতে এই আওয়ামী লীগ নেতারা ভারতে অবস্থান নেয়। সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আওয়ামী লীগ ধর্ষণ কাজে সিদ্ধহস্ত। তারা ধর্ষণ করবে এটাই স্বাভাবিক। সেটা বাংলাদেশ কিংবা ভারত বা মহাবিশ্বের যেখানেই হোক ধর্ষন তারা করবেই। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে ৩৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে গা বাঁচাতে ভারতে পালিয়ে গিয়েও তাদের এই ধর্ষণ কর্মে স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত আ.লীগ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, সিলেট মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি রিপন ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ইলিয়াস আহমেদ জুয়েল। পলাতক দুইজন হলেন সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসার আজিজ ও সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিতু।
শিলং থানা সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতারা সিলেট থেকে পালিয়ে শিলংয়ে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তাদের বাসায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নির্যাতিতা বাদী হয়ে শিলং থানায় ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় কলকাতায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পলাতক আরও দুই আসামি।
শিলং পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতারা সিলেট থেকে পালিয়ে শিলংয়ে অবস্থানকালে সেখানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে শিলং থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও পলাতক রয়েছেন আরও দুজন। তারা হলেন, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আফসার আজিজ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু।
কলকাতা ও শিলংয়ে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, আমরা যতদূর জানি, সিলেট মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল লতিফ রিপন ও সদস্য ইলিয়াস আহমেদ জুয়েল। এ অপকর্মে মহানগর আওয়ামী লীগ জড়িত থাকলেও তাদের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করায় বাকি চারজন আসামি হয়েছেন।
তবে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা তাদের নাম প্রকাশ না করে বলেন, শিলংয়ের উদ্দেশ্যে তাদের আন্দোলনের পাস নিয়ে সংশ্লিষ্ট থানাকে না জানিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নাসির উদ্দিন খানসহ ছয়জন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর শিলংয়ে ছিলেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তারা শিলং ছেড়ে ১ ডিসেম্বর কলকাতায় যান।
কলকাতায় অবস্থানরত এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, শিলং থেকে কলকাতায় যাওয়ার সময় তারা স্থানীয় থানায় খবর দেননি। পরে পুলিশ ফ্ল্যাটে গিয়ে খোঁজ খবর নিলে ফ্ল্যাট কর্তৃপক্ষ থানায় যোগাযোগ করতে বলে। কিন্তু কলকাতা থেকে শিলংয়ের দূরত্ব দীর্ঘ হওয়ায় তারা আর সেখানে না গিয়ে স্থানীয় থানায় বিষয়টি জানায়।
তবে এক যুবলীগ নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, লতিফ ও রিপন এই অপকর্ম করেছে বলে শুনেছি। তবে আমি কলকাতায় থাকায় তা নিশ্চিত করতে পারছি না। বাকিরা একই ফ্ল্যাটে থাকার কারণে আটকা পড়েছেন।
গ্রেফতারকৃত জুয়েল সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেনের চাচাতো ভাই বলে ওই নেতা বলেন, জুয়েল ও রিপনের বদনাম আছে তাই এ ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দিতে পারছি না।
কলকাতায় অবস্থানরত এক শীর্ষস্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা বলেছে,”আমরা এখনও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে পারিনি। তাদের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে যতদূর জানি, তারা শিলং থেকে আন্দোলনের পাস নিয়েছিলেন। কিন্তু তারা যে ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন সেখান থেকে স্থানীয় থানায় খবর দিলেও তারা ফিরে যেতে পারেননি শিলং পর্যন্ত।
আরো পড়ুন