হাইকমিশনে হামলা করে ভিয়েনা কনভেনশনের সরাসরি লঙ্ঘন করলো ভারত
ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। বাংলাদেশের পতাকাও পোড়ানো হয়। এর মাধ্যমে ভারত ১৯৬১ সালের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন সরাসরি লঙ্ঘন করেছে।
১৯৬১ সালে জাতিসংঘের উদ্যোগে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে ভিয়েনা কনভেনশন স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে কূটনীতিকদের আচার-আচরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ ছিল। এতে মোট ৫৩ টি প্রবন্ধ বা ধারা রয়েছে।
এই চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল কিছু নিয়ম ও নীতি অনুসরণ করে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা। সে সময় স্বাধীন দেশগুলো সেই চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে স্বাধীন হওয়া দেশগুলোও এই চুক্তিতে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে।
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে এই চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির ১২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে গ্রহণকারী দেশকে অবশ্যই কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। আর বিদেশী কূটনৈতিক মিশনের প্রধানের অনুমতি ছাড়া মিশনের অফিস এলাকায় গ্রহনকারী দেশের সরকার প্রবেশ করতে পারবে না।
সোমবার রাতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া জানায়। এতে সনদ লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে সোমবার আগরতলায় হিন্দু সংগ্রাম সমিতির বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রাঙ্গণে সহিংস বিক্ষোভ ও হামলার কারণে বাংলাদেশ সরকার গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।
এতে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য থেকে প্রমাণিত হয় যে আন্দোলনকারীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙ্গে প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে। এ সময় স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা পতাকা ভাংচুর, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে থাকা সম্পত্তিরও ক্ষতিসাধন করে। দুর্ভাগ্যবশত, হাইকমিশন চত্বর রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যরা শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেনি। সহকারী হাইকমিশনের সকল সদস্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
বাংলাদেশ সরকারও বলতে চায় যে বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের উপর এই জঘন্য হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অসম্মান একটি প্যাটার্নে এসেছে, ২৮ নভেম্বর কলকাতায় অনুরূপ সহিংস বিক্ষোভ হয়েছিল।
এতে আরও বলা হয় যে, যেহেতু কূটনৈতিক মিশনগুলোকে যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করা সেই দেশের সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এই ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে এবং ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করার আহ্বান জানায়। এটি ভারতকে বাংলাদেশি কূটনীতিক এবং অ-কূটনীতিক সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কূটনৈতিক মিশনে কোনো সহিংসতা প্রতিরোধ করার আহ্বান জানায়।
আরো জানতে
ভারতে ৫০০ বছরের প্রাচীন মসজিদ কেন্দ্রিক পুলিশের গুলি: নিহত ৬