কুমিল্লা নামেই বিভাগ হবে: উপদেষ্টা আসিফ
স্থানীয় সরকার ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “পতিত স্বৈরাচারের সময় কুমিল্লাকে বিভিন্ন সময়ে বঞ্চিত করা হতো। এই অঞ্চলের দাবি, কুমিল্লাকে প্রশাসনিক বিভাগ করার। এ বিষয়ে আলোচনা করবো এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেব। আমিও বলবো, যদি বিভাগ হয় তাহলে কুমিল্লা নামেই হবে”।
(স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা কুমিল্লা বিভাগকে মেঘনা বিভাগ নাম দিতে চেয়েছিলেন। কুমিল্লাকে তার কখনো পছন্দ ছিল না। কারণ তিনি মনে করতেন তার বাবার স্বৈরাচারী ঠেকিয়ে দিতে কুমিল্লার অবদান ছিল সবচেয়ে বেশি।)
শনিবার বিকেলে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দূর্গারাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আপনি যদি শেখ হাসিনার মতো ভাগ্য না চান, তাহলে বহিরাগত শক্তির আশীর্বাদ নয়, জনগণের ম্যান্ডেটই হবে ক্ষমতায় আসার একমাত্র উপায়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নানা ধরনের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক ষড়যন্ত্র চলছে।
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি গভীর ধারণার জন্ম হয়েছে যে, মনে হচ্ছে ভারতের আশীর্বাদ ছাড়া বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। ফলে তারা যেভাবে কথা বলছে তা স্বাধীন দেশের মানুষের জন্য খুবই লজ্জাজনক। আপনারা যদি মনে করেন ভারতের আশীর্বাদ ছাড়া এদেশে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তাহলে বলতে হবে শেখ হাসিনার চেয়ে বড় আশীর্বাদ আর কারোর জন্য ছিল না। বাংলাদেশের জনগণ সেই শেখ হাসিনার কী পরিণতি করেছে তা আপনারা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন। ভবিষ্যতে এমন পরিণতির মুখোমুখি হতে না চাইলে বাংলাদেশের জনগণের ম্যান্ডেটকেই ক্ষমতায় আসার একমাত্র উপায় হিসেবে গ্রহণ করুন।
অনুষ্ঠানে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা জেলার মোট ৩৫ জন শহীদকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেন, বিএনপি নেতা শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়বাদের ভাই কাজী জুন্নুন বসরী, সাবেক জাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ কফিল উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন মাহমুদ, সোনাকান্দা দরবার শরীফের প্রতিনিধি কামরুল হাসান প্রমুখ। ই-ইসলাম প্রতিনিধি মুফতি মো সাদেকুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আ ন ম ইলিয়াস, সাবেক আমির মনসুর মিয়া, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলা সভাপতি এম এম মনিরুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সমন্বয়ক তরিকুল ইসলাম।
এর আগে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বিকেলে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার সকল কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে কুমিল্লা জেলার ৩৫টি শহীদ পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের চেক তুলে দেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
