সুপ্রিম কোর্টসহ সব আদালত ও বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রধান বিচারপতির নির্দেশ
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণসহ সকল অধস্তন দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত বা ট্রাইব্যুনালে কর্মরত বিচারকদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং তাদের আদালত কক্ষ ও বাসভবযে নিরাপত্তানিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন । আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতির নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. আজিজ আহমেদ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সংঘটিত নজিরবিহীন ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং একই সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের জেলা আদালতে যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে প্রধান বিচারপতি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ইতোপূর্বে দেশের প্রতিটি আদালত বা ট্রাইব্যুনাল চত্বর, আদালত ভবন, বিচারকদের বাসভবন, বিচারকদের যানবাহন, বিচারক ও কর্মচারীদের স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছে। .
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি প্রধান অঙ্গের একটি। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং আদালতের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে প্রধান বিচারপতি দেশের প্রতিটি আদালত বা ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণ, আদালতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এমতাবস্থায় দেশের প্রতিটি আদালত বা ট্রাইব্যুনাল চত্বর, আদালত ভবন, বিচারকদের বাসভবন, বিচারকদের যানবাহন, বিচারক ও কর্মচারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।
নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল পুনরুজ্জীবিত করলেন আপিল বিভাগ
রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এর ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ নতুন করে উন্মোচিত হলো বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে, এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এরপর ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াতে ইসলামী।
তবে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানিতে জামায়াতের মূল আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বিভাগ ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ বলে আপিল আবেদনটি খারিজের আদেশ দেন। এর ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল থাকে।
এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার পতনের পর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে দায়ের করা আপিল আবেদন পুনরুজ্জীবিত করতে চাওয়া দলটির আবেদন গ্রহণ করেন আপিল বিভাগ। আদালতে আবেদনের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। পরে এই আইনজীবী বলেন, ‘ডিসমিস ফর ডিফল্ট’ হিসেবে খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত (রিস্টোর) করতে আবেদন করেছিলাম।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ১ আগস্ট জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করে শেখ হাসিনার সরকার। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ১৮(১) ধারায় জামায়াত, ছাত্রশিবিরসহ তাদের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে গত ২৮ আগস্ট জামায়াত ও ছাত্রশিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।