বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন রোহিঙ্গা শরণার্থীরা
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরের একটি প্রতিনিধি দল ফেনী নোয়াখালী কুমিল্লাসহ দাবানলে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে।শরণার্থী শিবিরে চাল-ডালসহ বিভিন্ন পণ্য সংগ্রহ করে বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান।
উখিয়া কুতুপালং উদ্বাস্তু সম্প্রদায় জানায়, গত দুই দিনে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও লক্ষীপুরের বন্যা কবলিত তিন হাজার পরিবারে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে তারা। তাদের ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে নগদ অর্থ ও বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী।
রোহিঙ্গা সংগঠক আরমান এলাহী ও সৈয়দুল হক জানান, গত ৩২ বছর ধরে তারা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ শুরু থেকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গারাও বাংলাদেশের বন্যা দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে এবং তাদের দুর্দশা লাঘবে অংশ নিতে চায়। শরণার্থীরা জানান, তারা বন্যার্তদের সহায়তা অব্যাহত রাখবেন। দেশের ১১টি জেলায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। যা গতকাল ছিল ৫৪ জন। এর মধ্যে ফেনীতে রয়েছেন ২৩ জন।
আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুর ১টা পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যা কবলিত জেলার সংখ্যা ১১টি (ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার)।
খবরে বলা হয়েছে, বন্যায় মৃতের সংখ্যা ৫৯ জন। এদের মধ্যে ৪১ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা ও ১২ জন শিশু। কুমিল্লা-১৪, ফেনী ২৩, চট্টগ্রাম ৬, খাগড়াছড়ি ১, নোয়াখালী ৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১, লক্ষ্মীপুর ১ ও কক্সবাজার ৩, মৌলভীবাজার ১। নিখোঁজ ব্যক্তির সংখ্যা ১ জন (মৌলভীবাজার)।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১টি জেলা হলো ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ, সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, ৬৮টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে এবং ৫০৪টি ইউনিয়নও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে মোট ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫ পরিবার পানিবন্দী। আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭০২ জন।
পানিবন্দী/ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয় দিতে মোট ৩৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন এবং ৩৬ হাজার ১৩৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১টি জেলার ক্ষতিগ্রস্থদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৫১৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।