November 21, 2024
এস আলম গ্রুপ গোপনে জমি বিক্রির চেষ্টা করছে, কেউ কিনবে না: গভর্নর

এস আলম গ্রুপ গোপনে জমি বিক্রির চেষ্টা করছে, কেউ কিনবে না: গভর্নর

এস আলম গ্রুপ গোপনে জমি বিক্রির চেষ্টা করছে, কেউ কিনবে না: গভর্নর

এস আলম গ্রুপ গোপনে জমি বিক্রির চেষ্টা করছে, কেউ কিনবে না: গভর্নর

বাজেয়াপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় এস আলম গ্রুপের বেনামী জমি-সম্পদ না কেনার জন্য জনসাধারণকে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, “কেন্দ্রীয় ব্যাংক এস আলম গ্রুপ এবং তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সকল ব্যাংক লেনদেন ও ঋণ স্থগিত করেছে। এখন কোম্পানিটি বিভিন্ন জমি-সম্পত্তি-বানম নামে বিক্রি করার চেষ্টা করছে। এ জন্য আইনি প্রক্রিয়া প্রয়োজন। তাই রাষ্ট্রের স্বার্থে এস আলম গ্রুপের জমি ও সম্পদ ক্রয় করবেন না।

তিনি বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ বাজেয়াপ্তের ভয়ে গোপনে সম্পদ বিক্রি করছে। আইনি জটিলতায় বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করতে পারছে না। তবে শিগগিরই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে, কেউ যেন এস আলম গ্রুপের সম্পদ ক্রয় না করে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সতর্ক করছি। এসব সম্পদ জনগণের। এখানে কেউ স্পর্শ করবে না।’

ইসলামী ব্যাংক ও পরিচালনা পর্ষদে ঘটে যাওয়া কেলেঙ্কারি সম্পর্কে তিনি বলেন, এত ব্যাপক, সুপরিকল্পিত এবং রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ব্যাংক কেলেঙ্কারি আমি কখনো দেখিনি। এর চেয়ে বড় ব্যাংক কেলেঙ্কারি আমি পৃথিবীতে দেখিনি। এটি সম্ভবত সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্ক কেলেঙ্কারী আমাদের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় মডেল।

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের নতুন পর্ষদ নিয়ে বসব। আমি তাদের এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি। তারা আমাদের একটি কর্মপরিকল্পনা দেবে। এখন আর বসে থাকার সময় নেই, কাজ করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গেই কাজ করতে হবে। বোর্ড এখানে মালিক নয়, তাই তাদের কাজ করতে হবে সরকারের স্বার্থে, ব্যাংকের স্বার্থে এবং আমানতকারীদের স্বার্থে। বোর্ড দিয়েছি, প্রয়োজনে বোর্ড পরিবর্তন করব। প্রত্যেকে তাদের কাজ কার্যকরভাবে এবং নিরপেক্ষভাবে করতে দিন।’

গভর্নর আরও বলেন, আপাতত কাজটি চালানোর জন্য ছয়টি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়েছে। শিগগিরই আরও কয়েকটি সংস্কার করা হবে। তারা এখন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংক পরিচালনা করবে। সঠিকভাবে কাজ না করলে, তাদের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনও করা হবে।

ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, “সেটি প্রক্রিয়া এখন বাতিল করা হয়েছে।” ভবিষ্যতে ব্যাংকিং কমিশন বা টাস্কফোর্স এসে পরামর্শ দেবে, সেভাবে করা হবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ‘যেহেতু দেশে বড় ধরনের বন্যা হয়েছে। তাই আগামী দুই থেকে তিন মাসে মূল্যস্ফীতি কমতে পারে না। তবে আমি আশাবাদী যে আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমবে। কারণ মূল্যস্ফীতি কমাতে দুই দিক থেকে কাজ করতে হবে- বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছি। সরবরাহের দিক ঠিক থাকলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক ডলারও বিক্রি হবে না। তবে আমরা বাজার থেকে ডলার সংগ্রহ করে সোনালী ও অন্যান্য ব্যাংককে দিয়ে থাকি সরকারি অর্থ পরিশোধের জন্য। আমরা সেখান থেকে ডলার ম্যানেজ করছি। আগে খোলা এলসি, দায় পরিশোধ, বিদ্যুৎ ঋণ পরিশোধ এবং সার আমদানির ওপর জোর দিয়ে বাজার কিন্তু রিজার্ভ থেকে এক ডলারও বিক্রি করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়ে গভর্নর বলেন, একসঙ্গে সব টাকা তুলতে গেলে পৃথিবীর কোনো ব্যাংক টাকা দিতে পারবে না। তাই যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ছাড়া অতিরিক্ত টাকা ব্যাংক থেকে তুলবেন না।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াবে তবে একটু সময় লাগবে। এতদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। অতিরিক্ত সুদের লোভেই হোক বা যে কোনো কারণেই হোক আপনারা এইসব ব্যাংকগুলোতে টাকা রেখেছিলেন। এখন একসঙ্গে সবাই মিলে টাকা তুলতে গেলে হবে না।’

ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে আগের মতো সহায়তা দেয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকার টাকা ছেপে আর কোনো ব্যাংককে অবৈধ সুবিধা দেবে না। আমানতকারীদের আস্থা ব্যাংকগুলোকেই ফেরাতে হবে। এখন টাকা ছেপে আমানতকারীদের সহযোগিতা দিলে পুরো বাংলাদেশ এটার জন্য ইফেক্টেড হবে। তাই এখন আমানতকারীদের ধৈর্য ধরার কোন বিকল্প নেই।’

আরো পড়তে

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X