মহাসড়কে চাঁদাবাজির গোমর ফাঁস করলো শিক্ষার্থীরা
৫আগস্ট থেকে পুলিশ কর্মীরা কর্মবিরতিতে। ফলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড মোড়ে ত্রিমুখী চলাচলকারী যানবাহনের শৃঙ্খলা রক্ষায় শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা স্বেচ্ছায় কাজ করছেন। গত পাঁচ দিন ধরে তারা সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন।মহাসড়কের ওই মোড়ে মাসে লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজির গোমর ফাঁস হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের কাছে। এর সঙ্গে জড়িত কথিত যুবলীগ নেতা, ইসলামী দলের নেতাসহ একাধিক মালিক শ্রমিক সংগঠন। দরিদ্র অসহায় চালকরা প্রতিদিন শোষিত হচ্ছে।
এলাকায় তল্লাশি ও দায়িত্বে নিয়োজিত শিক্ষার্থীরা জানান, পুলিশ বা যানবাহন না থাকায় মহাসড়কের ওই গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা দায়িত্ব পালন করছেন। আনোয়ার হোসেন, মোজাহিদ, নাজমুল, খন্দকার মনির হোসেন, ইমাম হোসেন, আশিকুর রহমান, সৈয়দ ইশতি ও মুন্নি আক্তারসহ ১২-১৪ জন রাস্তা ও গোল চত্বরে অবস্থান করছেন। গত ৬ আগস্ট থেকে সড়কে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়েছেন। চাঁদা আদায়ের চিত্র তারা নিজ চোখে দেখেছেন। প্রতিবাদও করেছে তারা।
রক্ত চক্ষু ও বাধা এসেছে। তবে ছাত্ররাও পিছপা হননি। দৃঢ়তার সাথে দায়িত্ব পালন করা হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ওই সড়কের মোড়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা জানান। তারাসহ স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইলের বিশ্বরোড মোড় দিয়ে ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ অঞ্চলের সব ধরনের যানবাহন দিনরাত চলাচল করে। এটি সমগ্র বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ওই চৌরাস্তার চারপাশে সিএনজি চালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড রয়েছে। আর সেই অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য মালিক শ্রমিক সংগঠন। হাতেগোনা কয়েকজন লাঠি ও ছাপানো রশিদ নিয়ে দিনরাত অটোরিকশা চালকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে। মাসে লাখ লাখ টাকা উঠছে।
আর এই টাকার ভাগ নিয়মিত যাচ্ছে হাইওয়ে পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায়। আরেক শ্রেণির মানুষ মিডিয়ায় নাম বদনাম করে হাইওয়ে পুলিশের কাঁধে ভর করে নিয়মিত সিএনজির দালালি করছে। রাস্তার পাশে সওজের খোলা জায়গায় ছোটখাটো ব্যবসা করছেন গরীব মানুষ। তাদের প্রত্যেককে স্থানীয় যুবলীগ নেতাকে দৈনিক ৩০০-৪০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। গত দেড়-থেকে দুই বছর ধরে এ অবস্থা চলছে। শিক্ষার্থীরা বলেন, মহাসড়কের সরাইলের এ স্থান থেকে চাঁদাবাজি, দালালিসহ সব ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে। টোল আদায়ের কারণে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার জন্য চাঁদাবাজি বেশি দায়ী।