চরম বাজে খেলে হেরেছে বাংলাদেশ:সেমিতে দুর্দান্ত আফগানিস্তান
চরমভাবে বাজে খেলে হেরেছে বাংলাদেশ। আর আফগানিস্তানের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া আর আমাদের টাইগার ভাইয়েরা। আর আজকে এমপি সাহেব নিয়েছেন ০ রান। দলের হাল কিভাবে ধরতে হয় জানিয়ে দিয়েছেন দলের প্রধান আকর্ষণ-বিকর্ষণ আওয়ামী লীগ এমপি সাকিবুল হাসান।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, বাতাসে বারুদের গন্ধ আর বেঁচে থাকার দায়! সে দেশে সংগঠিত ক্রিকেট খেলা কঠিন। পাকিস্তানের শরণার্থী শিবিরে ক্রিকেটের উত্থানেও বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে আফগানিস্তান। তারা আগে বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন পরাশক্তি হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিল, এখন ধীরে ধীরে সেই দিকে এগোচ্ছে। আর এভাবেই আফগান ক্রিকেট দল প্রথমবারের মতো উঠলো সেমিফাইনালে। যে স্বপ্নে এখনো পৌঁছতে পারেনি বাঙালিরা ।
বাংলাদেশ দলকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসরের সেমিফাইনালে উঠেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট দল। আফগানিস্তানের ৮ রানের জয়ে অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশীদের সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন ভেস্তে যায়।
বাংলাদেশ ৭৩ বলে ১১৬ রান করতে পারলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে চলে যেত। আজ বাংলাদেশ জিতলে অস্ট্রেলিয়া লাভবান হত।রান রেটে লিড নিয়েই সেমিফাইনালে যেতে পারত বাঙালিরা।কিন্তু বাঙালির পরাজয়ে আফগানদের ভাগ্য সুখের। বিদায় নিল অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংস্টনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সুপার এইটের শেষ ম্যাচে টসে জিতে আফগানিস্তান ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রান করেছে।
১ উইকেটে ৪০ রান করে ভালো অবস্থানে ছিল আফগানরা। এরপর রিশাদ হোসেনের লেগ স্পিন ও মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদের গতিতে মাত্র ১২ বলে ৯ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় আফগানরা। শেষ পর্যন্ত শক্ত উইকেট পতনের কারণে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১১৫ রানের বেশি করতে পারেনি আফগানরা।
আফগানিস্তানের হয়ে ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ৫৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় সর্বোচ্চ ৮০ রান করেন। ইনিংস শেষে রশিদ খান ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০ বলে তিনটি ছক্কায় ১৯ রান করেন। এছাড়া ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ২৯ বলে ১৮ রান করেন।
বাংলাদেশ দলের হয়ে লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন তাসকিন ও মুস্তাফিজ।
আফগানদের ১১৫রানে সীমাবদ্ধ করার পর বাংলাদেশের সামনে সেমিফাইনালের সমীকরণ ছিল- বাংলাদেশ ১২.১ ওভারে জিতলে সরাসরি সেমিফাইনালে চলে যাওয়ার।
অথবা সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য অবশ্য ১২.৫ ওভারে এই রান টপকালেও হতো বাংলাদেশকে। সে ক্ষেত্রে স্কোর সমান হওয়ার পর একটি ছয় মারতে হবে। অর্থাৎ ১২.৫ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ১২১ রান। আবার ১২.৩ ওভারে আফগানিস্তানকে টপকাতে পারলেও সেমিফাইনালে যাবে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে ১২.৩ ওভারে করতে হত ১১৯ রান।
আর আফগানিস্তান কোনোভাবে জিতলেই সেমিফাইনালে চলে যাবে। তবে বাংলাদেশ কোনোভাবে জিতলে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানকে হতাশ করে সেমিফাইনালে চলে যাবে অস্ট্রেলিয়া।
৭৩ বলে ১১৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামার আগেই বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। বৃষ্টির কারণে আফগানিস্তানের ইনিংস শেষে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে কিছুটা বিলম্ব হয়। এরপর প্রথম ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৩ রান।
দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ফজল হক ফারুকির বলে এলবিডব্লিউ হন। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে শান্ত বাউন্ডারি মেরে ইনিংস শুরু করেন এবং এক বল পর বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
তৃতীয় বলে নাভিন-উল-হকের আউটের পর উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১ রান। তারপর স্থানীয় সময় ১১.১৫ মিনিটে বৃষ্টি শুরু হয়। যে কারণে খেলা বন্ধ। খেলা 28 মিনিট পরে আবার শুরু হয়. বৃষ্টির পর খেলা শুরু হলে ১০ বলে মাত্র ১০ রান করে ঘাম ঝরিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন সৌম্য সরকার।
৬.৩ ওভারে সৌম্য আউট হলে বাংলাদেশের সংগ্রহ মাত্র ৪৮ রান। ৭৩ বলে ১১৬ রানের টার্গেট নিয়ে রানের চাপ ক্রমশ বাড়ছিল। তাই ব্যাটিংয়ের পরপরই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন তাওহিদ হৃদয়। সেটা করতে গিয়ে নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন এই তরুণ ব্যাটসম্যান।
তাওহিদ প্রতিটি বলেই বাউন্ডারি মারার চেষ্টা করে। ১৪ রানে মাত্র ৯ বল খেলে বাউন্ডারি মেরে ক্যাচ নেন তাওহিদ। তার আউটে হতাশ নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তার রানের গতি প্রেরণা যুগিয়ে ছিল বাংলাদেশীদের।
দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রান পাননি সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। ৯ বলে মাত্র ৬ রান করে ফেরেন তিনি। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন রিশাদ হোসেন।
১১.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ৮২ রান। তারপর আবার বৃষ্টি শুরু হলো। ৭ মিনিট পর খেলা আবার শুরু হলে ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমে ১ ওভার করা হয়। বাংলাদেশের নতুন টার্গেট ১৯ ওভারে ১১৪ রান। মানে ৬ বলে মাত্র ২ রান।
১১৪ বলে ১১৪ রানে ব্যাট করছেন লিটন কুমার দাস। তাকে সঙ্গ দিতে নেমে পেস বোলার তানজিম হাসান সাকিব ১৪.২ ওভারে দলকে ফেরান ৯২ রানে।
ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে উইকেটের এক প্রান্ত ধরে রাখেন লিটন কুমার দাস। ৪১ বলে ৫ চার ও একটি ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করার পর লিটন দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে পারেননি কারণ শেষের ব্যাটসম্যানরা তা ধরে রাখতে পারেননি।