November 23, 2024
পুলিশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ

পুলিশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ

পুলিশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ

পুলিশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএসএ) দাবি করেছে, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া) এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আংশিক সত্য ও মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে। এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন শুক্রবার এক সার্কুলারে ভবিষ্যতে পুলিশ বাহিনীর বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নৈতিকতাকে আরও বেশি সতর্কতা ও যথাযথভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে।

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবার এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া ও তার পরিবারের সম্পদ নিয়ে সম্প্রতি গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার সম্পদের তদন্ত শুরু করার পর ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন বেনজির।

এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তর মিলনায়তনে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কেউ কেউ এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান। বৈঠকের পরদিনই পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিজ্ঞপ্তি আসে।

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম ও অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল স্বাক্ষর করে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, – কোনো কোনো গণমাধ্যম ব্যক্তিগত আক্রোশ ও নিজস্ব স্বার্থ রক্ষায় কোনো কোনো পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবমাননাকর নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার করছে, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার বিরোধী। এমতাবস্থায় কী কারণে, কার উদ্দেশ্য হাসিল এবং কার নির্দেশ (ম্যানডেট) বাস্তবায়নের জন্য কতিপয় গণমাধ্যম বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে এ ধরনের কুৎসা রটনায় লিপ্ত, সেই প্রশ্ন উত্থাপন করা অযৌক্তিক নয়।

পুলিশ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সব সময় ‘জিরো টলারেন্স’ (শূন্য সহনশীলতা) নীতি অনুসরণ করে আসছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। বলা হয়, কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয় না। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনাকে বরাবরই স্বাগত জানানো হয়; কিন্তু গণমাধ্যমে কোনো খণ্ডিত বা আংশিক সংবাদ প্রকাশের তারা প্রতিবাদ করতে চান। গণমাধ্যমে কোনো ঘটনার সামগ্রিক চিত্র উঠে আসুক, সত্য উন্মোচিত হোক। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন হোক সত্যাশ্রয়ী ও বস্তুনিষ্ঠ।

নিরপেক্ষ সংবাদ প্রকাশে পাঠকের কাছে গণমাধ্যমের দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেন, এক রহস্যময় কারণে একশ্রেণির গণমাধ্যম অতি সুকৌশলে পুলিশকে বিতর্কিত করে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর অপচেষ্টায় মেতেছে, যা সৎ সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধকারী অপসাংবাদিকতারই নামান্তর বলে পরিগণিত হয়। গণমাধ্যমের এ ধরনের একপেশে আচরণ সাধারণ পাঠকের সঙ্গে প্রতারণার শামিল। এ ধরনের অপসাংবাদিকতা পুলিশের সৎ, নিষ্ঠাবান, পেশাদার ও দেশপ্রেমিক সদস্যদের মনোবল ধ্বংসের অপপ্রয়াস বলে প্রতীয়মান হয়, যা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে

পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন বলেছে যে এই ধরনের বিভ্রান্তি সন্ত্রাসবাদী এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকে উত্সাহিত করার একটি চক্রান্ত, এবং এটি বিবেচনার দাবি রাখে। ফলে ফলে পুলিশি সেবাপ্রত্যাশী মানুষ, তথা দেশ ও জাতি সামগ্রিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, পুলিশ কখনোই গণমাধ্যমের কাছ থেকে এ ধরনের অপেশাদার সাংবাদিকতা আশা করে না। জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার স্বার্থে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পুলিশ ইন্টারনাল সিকিউরিটি ফোর্স (বাংলাদেশ পুলিশ), বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত একটি সংস্থা রয়েছে। এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ কমিশনার। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেও বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী উপস্থিত ছিল এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে এই পুলিশ বাহিনীর বিশেষ অবদানও ছিল। স্বাধীন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর প্রধান কার্যালয় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে অবস্থিত।  স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ পুলিশের ইউনিফর্ম ছিল নীল, কিন্তু পরে বর্তমান (২০১২) রঙের ইউনিফর্মে পরিবর্তন করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এই বাহিনীর অবদান অনেক।

মেট্রোপলিটন পুলিশ

মেট্রোপলিটন আইনের অধীনে পুলিশ কমিশনারেট পদ্ধতি অনুযায়ী ময়মনসিংহ ব্যতীত অন্য সাতটি বিভাগ এবং গাজীপুর মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য গঠন করা হয়েছে। প্রথম ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠিত হয় ১৯৭৬ সালে। পরবর্তীতে আরও ছয়টি বিভাগীয় শহরে আরও ছয়টি এবং গাজীপুরে একটি পৃথক মেট্রোপলিটন পুলিশ বাহিনী গঠন করা হয়। মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান হলেন পুলিশ কমিশনার।

আরও জানতে

জাবিতে ছাত্রীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগে পুলিশ সদস্য গ্রেফতারঃ ছাত্রদের হালকা উত্তম মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X