সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ইস্যুতে দাস সুলভ আচরণে সরকার: মির্জা ফখরুল
মিয়ানমার বিগত বেশ কিছুদিন যাবত বাংলাদেশের উপরে খবরদারি করেই চলছে। আর এই সুযোগগুলো হয়তো বা মিয়ানমার নিচ্ছে বাংলাদেশের দুর্বল সরকারকে কেন্দ্র করে। যখন মায়ানমার দেখতে পাচ্ছে যে ভারত সহ অন্যান্য দেশ বাংলাদেশের উপর তাদের তদারকি এবং সিনিয়র সুলভ আচরণ করেই যাচ্ছে । সেই সুযোগে দুর্বল মিয়ানমারও বাংলাদেশকে হালকা পাতলা দৌড়ের উপরেই রাখছে। সেটার শিকার হচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকা সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ
মিয়ানমার সীমান্তে অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সৃষ্ট সংকটে সরকারের আচরণ দাসত্বপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে বিএফইউজে ও ডিইউজে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এটা সরকারের ব্যর্থতা। আমরা আমাদের দ্বীপে যেতে পারি না। সেই দ্বীপে অন্য দেশ থেকে গুলি করা হচ্ছে, গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো বিবৃতিও দেয়নি। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যে বিষয়ে আমরা বিবৃতি দেব।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই সরকার এতটাই বেঁকে গেছে যে মিয়ানমারের মতো দেশকেও তাদের পক্ষ থেকে কিছু বলা যাচ্ছে না। এটা কতটা দাসসুলভ আচরন হতে পারে। সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট দেখা দিলেও সরকার তা নিয়ে চিন্তিত নয়।
সরকার বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানিয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সীমান্তে প্রতিদিন আমাদের মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। পানি দিচ্ছে না। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে কোনো কথা বলছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, কারা সম্পদ লুটপাট করছে, কারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তা সবার জানা। কিন্তু সাংবাদিকরা লিখতে পারে না। আমরা একটু কথা বলার চেষ্টা করি। সাবেক এই পুলিশ প্রধান ডাকাতের মতো সম্পদ অর্জন করেছেন। বর্তমান সরকারের থলের বেড়াল বের হতে শুরু করেছে। আজিজ ভাইয়ের পাসপোর্ট জালিয়াতি ও নানা অনিয়মের কথা গণমাধ্যমে আসছে, এসব অপরাধের বিচার হওয়া উচিত সাবেক সেনাপ্রধানের।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডান ও বাম রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ। এই সরকারকে যেতেই হবে। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে।
মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদেরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আরো অনেক বেশি শক্তিশালী হবেন। আমি এখানেও বিভক্তি দেখতে পাই। আপনারা সিনিয়র-তরুণরা আরেকবার চেষ্টা করেন। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম খুবই কঠিন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আজকে সরকার বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব অন্য দেশের কাছে বিক্রি করেছে। অনেক দেশ বাংলাদেশের উপর খবরদারি করছে।।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এই অবৈধ সরকারের কারণেই জনগণের সব দুর্ভোগ। নির্বাচিত সরকার থাকলে দেশের মানুষের কোনো সমস্যা হতো না। এটা প্রমাণিত।
সেন্ট মার্টিন একটি দ্বীপ, যা আমাদের সাথে অন্তর্দেশীয় কিন্তু আজ বিচ্ছিন্ন, আব্বাস বলেন, সেখানে খাদ্য সরবরাহ পাঠানো যাবে না। কার ভয়ে? মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ভয়ে? আর এই মিয়ানমার সেনাবাহিনী ১৯৭৮ সালে তৎকালীন শহীদ প্রেসিডেন্টের কাছে মাথা নত করে ক্ষমা চেয়েছিল। মিয়ানমার আজ কতটা অহংকারী হয়ে উঠেছে, তারা আমাদের রক্তচক্ষু দেখায়। কারণ এই দেশে একটি অবৈধ সরকার আছে, একটি অনৈতিক সরকার আছে। দেশে ও দেশের বাইরে তাদের কোনো সমর্থন নেই। সেজন্য সুযোগ নিচ্ছে মিয়ানমারও।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ঈদ মানেই আনন্দ, কিন্তু এই সুখের মানসিকতা আজ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে নেই। সবার বেদনা, কষ্ট মুখ, চেহারা। আজ সারাদেশের মানুষ অক্টোপাসের মতো আটকে আছে। আমরা কোনোভাবেই ভালো অবস্থানে নেই। শান্তিতে নেই।
দেশবাসীকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে আব্বাস বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে। অনেক নেতাকর্মীর ঈদ কাটে জেলে, কেউ কাটে ফুটপাতে। কর্মী যারা ঘরে থাকতে পারছেন না। তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় নেই।
দেশের মানুষের আজ কথা বলার অধিকার নেই দাবি করে সাবেক এই মেয়র বলেন, , না খেয়ে মরে যাবে তবুও কথা বলতে পারবে না। এ থেকে উত্তরণের জন্য দেশবাসীর কাছে এই দিনে সব ভয় ভীতিকে কোরবানি দিয়ে, এই সরকারকে মোকাবেলা করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ, মির্জা আব্বাস বলেছেন, তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করছি।