আগামী বছর থেকে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
২০২৫ সাল থেকে নতুন পাঠ্যক্রমে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এই পাঠ্যক্রমে মূল্যায়ন বা পরীক্ষা কীভাবে হবে তা নিয়ে বিভ্রান্তির কারণে অভিভাবকরা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সে কারণে এসএসসি মূল্যায়ন পদ্ধতি ঠিক করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় এসএসসিতে লিখিত পরীক্ষা ৫০ শতাংশ রাখাসহ পাঁচ দফা সুপারিশ করেছে কমিটি। সুপারিশগুলির মধ্যে রয়েছে লিখিত মূল্যায়নের ওজন বা গড় ওজন ৫০ শতাংশ এবং প্রোগ্রাম-ভিত্তিক মূল্যায়ন ৫০ শতাংশ। আর পরীক্ষা হবে মোট পাঁচ ঘণ্টার।
নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার নাম এখনকার মতোই থাকলেও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোন অর্ধ-বার্ষিক এবং বার্ষিক মূল্যায়ন নেই। ১০ টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য ৫ ঘণ্টার পরীক্ষা হবে। লিখিত হবে ৫০ শতাংশ, এবং কার্যকলাপ ভিত্তিক মূল্যায়ন হবে ৫০ শতাংশ।
গত ২২ এপ্রিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) নিয়মিত বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি। বৈঠকে খসড়া সুপারিশগুলো নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। সেখানে এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
কমিটি তাদের সুপারিশ শিক্ষামন্ত্রীকে দেবে। এরপর আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পূর্বনির্ধারিত ন্যাশনাল কারিকুলাম কো-অর্ডিনেশন কমিটির (NCCC) সভায় এটি অনুমোদনের জন্য তোলা হবে। কমিটি অনুমোদিত হলে নতুন মূল্যায়ন কাঠামো সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এর আগে গত ৫ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ খালেদ রহিমকে আহ্বায়ক করে ১৪ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, নতুন পাঠ্যক্রম হবে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা। এই পাবলিক পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। বিষয়গুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি।
এই সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া হবে। বিষয়ের চাহিদা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী প্রকল্প ভিত্তিক কাজ, সমস্যা সমাধান, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি সহ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপনা, পরীক্ষা, পরিকল্পনা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নের জন্য শিক্ষার্থীদের বিরতিসহ ৫ ঘণ্টা পরীক্ষা কেন্দ্রে থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা বর্তমানের মতো পৃথক পরীক্ষা কেন্দ্রে মূল্যায়নে অংশগ্রহণ করবে।
এসএসসি পরীক্ষা পরিচালনার জন্য ৬০০ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সমন্বয়ে একটি রিসোর্স পুল (বিশেষজ্ঞ দল) গঠন করা হবে। প্রথমে বোর্ড আয়োজিত এনসিটিবি বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তাদের ৭ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আর ১১টি শিক্ষা বোর্ডের জন্য প্রতিটি বিষয়ে চারজন করে মোট ৪৪ জন শিক্ষক চূড়ান্ত করা হবে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে এনসিটিবির একটি কমিটিও রয়েছে। কমিটি মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির কাছে সুপারিশ পেশ করে। তারা এখনও চূড়ান্ত নয়। পরবর্তী পর্যালোচনার পর সুপারিশগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহিম গণমাধ্যমকে বলেন, নতুন পাঠ্যসূচিতে পাবলিক পরীক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে কিছু সুপারিশ আলোচনা করা হয়েছে। এখনো কোনো সুপারিশ জমা দেওয়া হয়নি. এটা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। শিগগিরই প্রতিবেদনটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে।
বিষয়গুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, ধর্মীয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, শিল্প ও সংস্কৃতি। এই সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়ের চাহিদা এবং যোগ্যতা অনুযায়ী প্রকল্প ভিত্তিক কাজ, সমস্যা সমাধান, অ্যাসাইনমেন্ট ইত্যাদি সহ লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। মূল্যায়নে অনুসন্ধান, প্রদর্শন, মডেল তৈরি, উপস্থাপনা, পরীক্ষা, পরিকল্পনা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।