November 22, 2024
ঢাকায় অস্ত্রহাতে গণছিনতাই

ঢাকায় অস্ত্রহাতে গণছিনতাই

ঢাকায় অস্ত্রহাতে গণছিনতাই

ঢাকায় অস্ত্রহাতে গণছিনতাই

প্রকাশ্যে সন্ধ্যার সময় অস্ত্র হাতে গণছিনতাই। তাও আবার ঢাকা শহরে । সরকারে যেই থাকুন না কেন এগুলোর ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নিন ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় গণ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ডাকাত দল,  দল বেঁধে প্রকাশ্যে একের পর এক ডাকাতি চালাচ্ছে। বিশেষ করে সামনে যারা আসছে তাদের পিটিয়ে আহত করে জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আদাবর থানার সেখেরটেক (পিসি কালচার) হাউজিং নম্বর ১/১ রোডে ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকজন পথচারী ও দোকানদারকে মারধর করে ডাকাতরা।

এর আগে ২০২৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুরের বসিলা গার্ডেন সিটি এলাকায় একই ধরনের সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এতে ২০ জন আহত হয়। বেশ কয়েকটি দোকানসহ ১৫-২০ জনের মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনতাই করা হয়। ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর ভরদুপুর থেকে ৫ থেকে ৬ জন যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।

এদিকে সোমবার ঘটনার বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে শেখরটেক হাউজিং ১ নম্বর সড়কে ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল ঢুকে চাপাতি ও বল্লম নিয়ে লুটপাট শুরু করে। ১ নম্বর রোড থেকে এর পাশের রোড নম্বর ২/১ আসে। এ সড়কে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত যুবকরা প্রথমে কয়েকজনকে মারধর করে এবং পরে দোকানপাট ও পথচারীদের মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন যে, তারা স্থানীয় নয়।

এই ঘটনার বেশ কিছু সিসিটিভি ফুটেজ  সাংবাদিকদের হাতে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আট থেকে ১০ জন যুবকের হাতে দেশীয় অস্ত্রসহ ধারালো চাপাতি রয়েছে। সবার মুখে মাস্ক। বেশিরভাগই কালো পোশাক পরা। দলটি প্রথমে ১ নম্বর সড়কের পাশে একটি মোটরসাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা চারজনকে লক্ষ্য করে। দলের কয়েকজন অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলা থেকে দুজন পালিয়ে গেলেও বাকি দুজনকে চাপাতির বিপরীত দিক থেকে মারধর করা হয়। অস্ত্রের মুখে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। জানা গেছে, এই চারজন বেসরকারি ব্যাংক ব্র্যাকের কর্মকর্তা। তারা ঋণ বিভাগে কাজ করে।

ডাকাতির শিকার দুজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে যোগাযোগ করেছে । তাদের মধ্যে একজন ব্যবসায়ী। ফয়জুল। সারাদিনের বেচা-কেনা শেষে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকজন অস্ত্রধারী ডাকাত তার দোকানে প্রবেশ করে। পরে অস্ত্রের মুখে দোকান থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।

বাঙ্গাড়ির ব্যবসায়ী ফয়জুল  বলেন, আমি ও আমার দুই কর্মচারী দোকানে মালামাল গোছাচ্ছিলাম। মালামাল গুছিয়ে দোকান বন্ধ করে দেব। হঠাৎ সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে কিছু লোক বড় বড় চাপাতি ও রামদা নিয়ে দোকানে প্রবেশ করে। একজন আমাকে চাপাতির উল্টো দিক দিয়ে আঘাত করলে আমি পড়ে যাই। এরপর অন্য এক ব্যক্তি রামদা হাতে  ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি দিয়ে নগদ টাকা দিতে বলে। পরে প্রাণের ভয় দেখিয়ে নগদ টাকা ও  আমার দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

অপর শিকার সুজন শেখ। পেশায় গাড়িচালক সুজন ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে একদল ডাকাত তার ওপর হামলা চালায়। সুজন কর্মস্থলে থাকায় তার বাবা কাহির শেখের সঙ্গে কথা হয়। তিনি  বলেন, সন্ধ্যায় আমার ছেলেকে ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতরা ধরে ফেলে। কয়েকজন তাদের রামদা ও চাপাতি দিয়ে মারধর করে। কপাল ভালো নেই আজ তাই ।

কাহির শেখ বলেন, অস্ত্রের মুখে তারা আমার ছেলের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। পকেটে কত ছিল জানি না। কিন্তু মোবাইলের দাম ছিল ১৫ হাজার টাকা। যদিও ছেলেটা চাকরি বাঁচাতে আবারও শরীর ব্যথা নিয়ে ডিউটিতে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ডাকাত দল শেখেরটেক এলাকায় প্রবেশ করলে রাস্তায় যাকে পায় তার কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে তারা শেখরটেক হয়ে মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটির ৩ নম্বর রোড হয়ে যায়। এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য তারা দুটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ব্যবহার করে। এগুলোও স্থানীয়দের দ্বারা ঠিক করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আদাবর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলামের কাছে বন্দুকের গুলিতে গণ ছিনতাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্র্যাক ব্যাংকের ঋণ বিভাগের একজন ভুক্তভোগী আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া ছিনতাইয়ের শিকার কেউ এখনো অভিযোগ করেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X