খুলনায় আওয়ামীলীগের উপজেলা চেয়ারম্যানের ধর্ষণকাণ্ডে বিব্রত আওয়ামী লীগ
আওয়ামীলীগ কর্তৃক এত বেশি পরিমাণে ধর্ষণ হয়েছে যেটা হয়তোবা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীর ধর্ষণের মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে । শিশু কিশোর বৃদ্ধা থেকে শুরু করে প্রতিবন্ধী, স্কুল কলেজ মাদ্রাসা ইউনিভার্সিটি এবং সকল রকমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রীদের ধর্ষণের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সর্বাগ্রে এবং সর্বোচ্চ । এমন কোন ডেঞ্জারাস জাতীয় ধর্ষণ নেই যেটা আওয়ামী লীগ ও তাদের ছাত্র আওয়ামী লীগ যুব আওয়ামী লীগ শ্রমিক-আওয়ামী লীগসহ সকল আওয়ামী লীগের নেতা কর্তৃক; বড় ছোট সকল মাপের আওয়ামী ঘরানার লোকদের দ্বারা ঘটেনি তা কেউ হলফ করে বলতে পারবেনা। তবে কেন যেন মনে হচ্ছে সংগঠনটি জনগণের পালসকে না ধরতে পারলে ধর্ষণসহ সকল অপকর্মে লিপ্ত এই দলটি প্রাকৃতিক ভাবেই হারিয়ে যায় কিনা ।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে সে।
এ ঘটনায় ভিকটিমকে শনিবার (২৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
ওসিসির সমন্বয়ক ডা. সুমন রায় জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ডুমুরিয়ার ২৮ বছর বয়সী এক নারীকে খুমেক হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে ওসিসিতে রেফার করা হয়। তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, মধুগ্রাম কলেজে পড়ার সময় উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। কিন্তু পরে বিয়ের কথা বলতে গেলে ঝগড়া শুরু হয়।
তবে ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, এ ব্যাপারে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। ফলে সত্য-মিথ্যা কিছুই বলতে পারছি না। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের ধর্ষণ মামলায় বিব্রত আওয়ামী লীগ। এ নিয়ে খুলনায় আলোচনার ঝড় বইছে। ধর্ষিতা তরুণীর ঘটনা গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলার সর্বত্র তোলপাড় শুরু হয়। এরপর গত রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতালের সামনে থেকে ওই তরুণীকে তুলে নেওয়া হয়। ঘটনার ৬ ঘণ্টা পর ওই তরুণী ও তার মা মাইক্রোবাসে হাসপাতাল থেকে একই গাড়িতে করে খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় হাজির হন।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই তরুণী গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাকে ধর্ষণ বা অপহরণ করা হয়নি। কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ সবাইকে ছেড়ে দেয়। রাত ১২টার দিকে তারা ডুমুরিয়ায় নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। এর আগে শনিবার রাতে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা গাজী এজাজ আহমেদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন ওই নারী। তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক দিন ধরে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। যা গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে।
খুলনার মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার একটি দল ভিকটিমদের বক্তব্য নেয়। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই নারী নিজেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি হন। রোববার সন্ধ্যায় ক্লিয়ার হয়ে গেলে মেয়ে ও তার মাকে ফিল্মি স্টাইলে হাসপাতালের ওসিসির সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদুজ্জামানকে আটক করা হয়েছে। তিনি ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদের চাচাতো ভাই। এ ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ একাধিক সূত্র জানায়, তুলে নেওয়ার পর মেয়ে ও তার মাকে কেশবপুর উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই মাইক্রোবাসে মেয়ে ও তার মা থানায় আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের পর তিনি গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাকে ধর্ষণ করা হয়নি। তাকে তার ভাই ও আরেকজন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন। সেখান থেকে ছাড়পত্র পেয়ে রোববার দুপুরে তিনি নিজে গাড়িতে করে যশোরের কেশবপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। পরে পুলিশ তাদের খবর দিলে তারা থানায় আসেন।
কেন ওই দুজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি। তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত দাবি করে, অতিরিক্ত প্রশ্ন করলে তিনি ‘পাগল’ হয়ে যাবেন বলেও দাবি করেন। যদিও সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ওই তরুণী জানান, ডুমুরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী এজাজ আহমেদ তাকে ধর্ষণ করেননি। এছাড়া হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর খুমেককে কেউ অপহরণ করেনি। তিনি নিজে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। আমিরুল ইসলাম আরও জানান, অপহরণের অভিযোগে গ্রেপ্তার এজাজের চাচাতো ভাই গাজী তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে ওই তরুণীর কোনো অভিযোগ নেই। সেজন্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে মেয়েটির ভাইয়ের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান এজাজও লোক চক্ষুর আড়ালে রয়েছেন। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, ঘটনাটি গণমাধ্যমে জেনেছি। আমরা খুবই বিব্রত। কিন্তু কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।