November 24, 2024
বাজারের সিন্ডিকেটে আটকা পড়েছে ১৫ বছরের বয়স্ক বাংলাদেশ সরকার

বাজারের সিন্ডিকেটে আটকা পড়েছে ১৫ বছরের বয়স্ক বাংলাদেশ সরকার

বাজারের সিন্ডিকেটে আটকা পড়েছে ১৫ বছরের বয়স্ক বাংলাদেশ সরকার

বাজারের সিন্ডিকেটে আটকা পড়েছে ১৫ বছরের বয়স্ক বাংলাদেশ সরকার

পণ্যের বাজারে স্বস্তির খবর নেই। বহুস্তরীয় সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হওয়া  বাজারের কারসাজি বন্ধ হয়নি। এই সিন্ডিকেট পণ্যভিত্তিক বাটপারিতে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে এই সিন্ডিকেট বাজার নিয়ন্ত্রণ করলেও এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না কেউ এমনকি এই বুড়ো সরকারও তাদের কাছে ফেইল । সম্প্রতি আলোচনায় এসেছে মার্কেট সিন্ডিকেট। চাল, চিনি, তেল, পেঁয়াজ, আটা, ডিম, মাংস, আলু এখন আর সিন্ডিকেটের বাইরে নেই। একেকটি সিন্ডিকেট একে একে সক্রিয়। সাধারণ মানুষের পকেট থেকে চুরি হয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। অনেক সময় কিছু ব্যবসায়ীকে ভোক্তা সুরক্ষা অধিদপ্তর জরিমানা করলেও পরে তারা আগের অবস্থায়ই ফিরে যায়।

সম্প্রতি দামের লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে তিনটি পণ্যের বাজারদর নির্ধারণ করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার থেকে তা সরকারি কথায়  কার্যকর হলেও বাজারে এর তেমন কোনো প্রভাবই  পড়েনি। সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, ডিম ও পেঁয়াজ। নানা অজুহাত দেখিয়ে এসব পণ্য বেশি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সংগঠিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। সরকারের উচিত কঠোরভাবে তাদের দমন করা।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের আলোকে আলুর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩৫-৩৬ টাকা, দেশি পেঁয়াজের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪-৬৫ টাকা এবং ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হলেও বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পণ্য।

গত সোমবার রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে। প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকায়, ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। সরকারের ঘোষণার পরও  এই  দামেই  বিক্রি হয়েছে এসব পণ্য। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার দাম ঘোষণা করলেও পাইকারি বাজারে ওই দামে কিনতে পারছেন না তারা।

রাজধানীর বিভিন্ন  এলাকার এক খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি বাজারে এখনো দাম আগের মতোই রয়েছে। আমরা যদি কম কিনতে পারি তাহলে বিক্রি করতে সমস্যা নেই। প্রতি কেজি আলুতে চার টাকা লাভ করতে পারলে আমাদের আর দরকার নেই। কিন্তু  আমরা  তাও পারি না।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, দাম বেশি হওয়ায় আমাদের গ্রাহকও কমে গেছে। আগে দুই কেজি আলু কিনতেন এখন এক কেজি। আগে প্রতিদিন দুই বস্তা আলু বিক্রি করতাম। এখন একটা ব্যাগও বিক্রি হয় না। মুনাফাও কমছে।

সরকার নির্ধারিত দামেরও কোনো প্রভাব নেই ডিমের বাজারে। এক ডজন ডিম নির্ধারিত দাম ১৪৪ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বেশিরভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। মুদি দোকানিরা জানান, ডিমে লাভ নেই। এক খাঁচা ডিম বিক্রি করেও ২০-৩০ টাকা আয় করতে পারি না। আমরা  শুধু কাস্টমার  ধারার  লিইগয়া রাখছি।

৭৫ টাকার নিচে দেশি পেঁয়াজ নেই। তবে সেরা মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি। কিছু আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। খুচরা পেঁয়াজ বিক্রেতাদেরও একই অবস্থা। দাম কমেনি। তাই তারা নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, সরকার সবকিছু বিবেচনা করে এসব পণ্যের দাম নির্ধারণ করেছে। এখন নির্ধারিত দামে বিক্রি করে স্বাভাবিক মুনাফা হচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিক মুনাফায় আগ্রহী নন ব্যবসায়ীরা। বেশি লাভ করতে চান। এখন যদি ব্যবসায়ীদের এই প্রবণতা বন্ধ না হয়, তাহলে আগে উৎপাদনের জায়গায় বা যেখান থেকে পণ্যে ছাড় দেওয়া হয় সেখানে দাম নির্ধারণ করতে হবে। সাপ্লাই চেইন ঠিক রাখতে পারলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে একটু তদারকি করলে বাজার ঠিক হবে। শুধু বলা নয়। কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান বলেন, আলু প্রচুর পরিমাণে মজুদ আছে । আলুর অভাব নেই। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত ঘাটতির কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই। মেকানিজম করছে দালালরা। গত দেড় মাস ধরে আলুর বাজার অস্থির। দেশের বিভিন্ন হিমাগারের দালালরা ইচ্ছাকৃতভাবে আলুর দাম বাড়াচ্ছে। জাতীয় ভোক্তা সুরক্ষা অধিদপ্তর এই ভুল তথ্য বন্ধ করতে এবং আলুর দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সারা দেশে প্রচার চালাচ্ছে। সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হয় কি না, তা চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দেখা যাবে। না হলে সরকারের কাছে সুপারিশ করব। প্রয়োজনে আলু আমদানির জন্যও সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে।

আরও জানুন

মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে ডিমের অস্বাভাবিক দাম: নিয়মিত বাজার মনিটরিং ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

শিগগিরই বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ড. আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, আপনারা নিজেরাই দেখেন আমরা কিভাবে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করছি। আমাদের ডিজি স্যার নিজে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযানে যাচ্ছেন, ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। আমরা নিয়মিত আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি দ্রুতই নিয়ন্ত্রণে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X