দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশঃ হারিয়ে যাচ্ছে ল্যান্ডফোন
মোবাইল ফোনের আবিষ্কার , কম্পিউটারের অগ্রগতি আর এন্ড্রয়েড ফোনের সংযোগে আস্তে আস্তে পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ল্যান্ডফোন । ল্যান্ড ফোন নিতান্তই অফিশিয়াল কোন কাজ ছাড়া সাধারণত বাসা বাড়িতে আর দেখা যাচ্ছে না । এবং ভুলতে চলেছে বর্তমান প্রজন্ম এই ল্যান্ডফোনকে। তাবৎ দুনিয়ার শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার কাছে রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট । এবং মোবাইল ইন্টারনেটের সুযোগে সবাই এখন দুনিয়াকে নিজের কাছে টেনে বিশাল এই ভৌগোলিক জগতকে ছোট করে ফেলছে । তাতে কোন দিক দিয়ে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। ছোট্ট এ ভূখন্ডে প্রায় দশ কোটি মানুষ সংযুক্ত ইন্টারনেটের সাথে। যা নিম্নের পরিসংখ্যান থেকে ভালোভাবেই অনুমেয়।
দেশে ০.৭ শতাংশ পরিবারভিত্তিক ল্যান্ডলাইন রয়েছে। বিপরীতে,৯৭.৯ শতাংশ পরিবারের মোবাইল ফোনের অ্যাক্সেস রয়েছে। এছাড়া দেশের ৯৯.১ শতাংশ পরিবার বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ব্যক্তি ও গৃহস্থালি পর্যায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ব্যবহার ও প্রয়োগের ওপর জরিপের ফলাফলে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে ২০২৩ সালের জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. শাহনাজ আরেফিন, আইসিটি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক উত্তম কুমার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জরিপ প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা মারুফা শাকি।
দেশে, ৯৭.৯ শতাংশ পারিবারিক পর্যায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা ভোগ করে। পারিবারিক পর্যায়ে এই ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৪৩.৬ শতাংশে। এছাড়া ৬৩.৩ শতাংশ স্মার্টফোন, ১৪.৯ শতাংশ রেডিও, ৬২.২ শতাংশ টেলিভিশন এবং ৮.৯ শতাংশ কম্পিউটার ব্যবহার করে।
সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ব্যবহার জরিপ ২০২৩’-এর মূল প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকল্প ‘মেজারমেন্ট অব অ্যাকসেস অ্যান্ড অ্যাপ্লিকেশান অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) অ্যাট ইন্ডিভিজুয়াল অ্যান্ড হাউসহোল্ড লেভেল’-এর পরিচালক সৈয়দা মারুফা শফি এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
বেকার আর নারী এই দুই শ্রেণী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন বেশি
দৃষ্টিহীনদের দৃষ্টি ফিরাতে ‘আশার বাণী’
প্রকল্প পরিচালক সৈয়দা মারুফা শফি বলেন, গৃহস্থালি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ৫৯ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ২৭.৩ শতাংশ বরিশাল ও রংপুর বিভাগে, আর জাতীয় পর্যায়ে ৪৩.৬ শতাংশ। গৃহস্থালি পর্যায়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগে, ৯৯.২ শতাংশ, সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৯২.৪ শতাংশ।তিনি বলেন, কম্পিউটার ব্যবহারকারী সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তি পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৪৪ দশমিক ৫ শতাংশ, মোবাইল ফোন ৯০ দশমিক ৫ শতাংশ, কম্পিউটার ৭ দশমিক ৯ শতাংশ এবং নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে এমন মানুষের হার ৬৩ দশমিক ৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহনাজ আরেফিন ।
প্রতিবেদনে বলা হয় ১০ বছরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে ৯ গুণস্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বাড়ছে। কতটা ব্যবহার হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও ব্যবহার বাড়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিবিএস আইসিটি সমীক্ষার ফলাফল বলছে, দেশে বর্তমানে ৪৩.৬ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। যা ২০১৩ সালে ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। সে হিসেবে দশ বছরে ইন্টারনেটের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৯ গুণ।
এক বছর আগে এর ব্যবহারকারী ছিল৩৮.১ শতাংশ। সারাদেশে আইসিটির ব্যবহার ও প্রয়োগের সর্বশেষ তথ্য দিতে বিবিএস এই জরিপটি পরিচালনা করে।জরিপ অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৯৮ শতাংশ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, যার মধ্যে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। বিভাগ হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহারে চট্টগ্রাম বিভাগ সবচেয়ে এগিয়ে, যেখানে ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহার করা হচ্ছে। রাজধানীতে এর ব্যবহার ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
তবে ইন্টারনেট ব্যবহারে ঢাকাই সবচেয়ে এগিয়ে। এই ক্যাটাগরিতে ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন ৫৯ শতাংশ মানুষ। আর ইন্টারনেট ব্যবহারে পিছিয়ে রয়েছে রংপুর বিভাগ। যেখানে ২৭ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।সরকারিভাবে পরিচালিত এই জরিপের মাধ্যমে উল্লেখিত তথ্যগুলো উঠে এসেছে এবং তারা এজন্য মানসিকভাবে অনেকটা প্রফুল্ল।
যদিও ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে এর অনেক সুবিধা রয়েছে আবার রয়েছে অসুবিধাও । ভালো কাজ করার সুযোগ যেমন রয়েছে খারাপ কাজও চলে আসছে হাতের নাগালে।