October 18, 2024
প্রলয় গ্যাংয়ের উৎপাতে নাভিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের

প্রলয় গ্যাংয়ের উৎপাতে নাভিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের

প্রলয় গ্যাংয়ের উৎপাতে নাভিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের

প্রলয় গ্যাংয়ের উৎপাতে নাভিশ্বাস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের

ডাকাতদের গ্রাম;সেই উপাধি নিতে চাইনা আর আমরা।  কোনো দলের বা মহলের ছত্রছায়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবারো কলুষিত হোক সেটা একেবারেই  চাই না। দেশ-প্রশাসন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।  এখনই বন্ধ করুন।  তাদের অস্তিত্বকে সমূলে ঊপড়ে ফেলুন এক্ষূণী।

প্রলয় গ্যাং, প্রলয়ের মতই ভয়ঙ্কর তাদের সকল  কর্মকাণ্ড।  ক্যাম্পাসে মারামারি, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের বেছে বেছে দলটির সদস্য করা হয়। তারা ক্যাম্পাসে নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তারা নিয়মিত নেশার সেশন সেট করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিশু চত্বরের পাশেই তাদের পানের স্থান। তিনি সেই স্থানের নাম দেন ‘নিকুম্ভিলা’। শহীদ মুর্তজা মেডিকেল সেন্টারের তৃতীয় তলায় তারা গ্যাংয়ের কার্যালয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাংটির সদস্যরা সেখানে নিয়মিত জড়ো হয় , একসাথে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায় । সোশ্যাল মিডিয়ায় সবাই নিয়মিত ছবি দেয়। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। সকলেই ২০২০-২১  শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

শনিবার রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হল,কবি জসিম উদ্দিন হল ও বিজয় একাত্তর হলের সামনে ক্রিমিনোলজি বিভাগের জুবায়ের ইবনে হুমায়ুন নামে এক ছাত্রকে প্রকাশ্যে  মারধর  করে এই চক্রের সদস্যরা। জুবায়ের স্যার এফ রহমান হলের ছাত্র ।  তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। ঘটনার পর বেরিয়ে আসে এই চক্রের নাম

সাধারণ ছাত্রদের স্বার্থে তাদের নামগুলো  করা হলো (মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের তবারক, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের সিফরাত সাহিল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও দর্শন বিভাগের অর্ণব খান, তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাদমান তাওহিদ বর্ষণ, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের হেদায়েতুন নুর, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ, ইতিহাস বিভাগের বদরুজ্জামান সজীব, মার্কেটিং বিভাগের বিপ্লব হাসান জয় ও মোহাম্মদ শোভন, প্রিন্টিং অ্যান্ড পাবলিকেশন বিভাগের শাহ আলম, মাস্টারদা সূর্য সেন হলের তৌসিফ তাহমিদ অর্পণ ও নাজমুল হোসাইন, কবি জসীম উদ্‌দীন হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদ, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের তাহমিদ ইকবাল মিরাজ, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবু রায়হান ও জগন্নাথ হলের প্রত্যয় সাহা।)

তাদের মধ্যে নাজমুল হোসেন ও তৌসিফ তাহমিদ অর্পণ মাস্টারদা সূর্য সেন ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক, মাহিন মুনাওয়ার শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক।

জানা গেছে, তারা প্রতিটি হল থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের হিংস্র ও নেশাগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের বেছে নিয়ে এই গ্যাংয়ে জড়ো করেছে। তারা ক্যাম্পাসে এবং পার্কে তাদের আড্ডা, মাদক, ডাকাতির নিজস্ব জগত গড়ে তুলেছে। তাদের কয়েকজনকে মারধর ও অন্যান্য অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা একসাথে চলাফেরা করে। ঢাবি মেডিকেলের তৃতীয় তলায় নিজেদের অফিস গড়ে তুলেছেন তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চিকিৎসক বলেন, আমরা রাতে ডিউটি করতে ভয় পাই। চারপাশে মেডিকেল খোলা আছে এবং একদল ছাত্র মদ পান করে, গাঁজা খায় এবং আড্ডা দেয়। আমি খুব নিরাপত্তাহীন বোধ করছি।

গতকাল রাতে তাদের হাতে মারধরের শিকার জুবায়ের বলেন, কার্জন হলের সামনে আসামিরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় বাইকে যাচ্ছিল। তা দেখে তিনি তাদের বাইক চালাতে নিষেধ করেন। এ সময় তাদের মধ্যে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। এরপর তিনি হলপাড়ায় আসেন। কিছুক্ষণ পর তবারক একটি অপরিচিত নম্বর (সাহিলের নম্বর) থেকে ফোন করে তার অবস্থান জানতে চায় এবং দেখা করতে চায়। দেখা করতে এলে দলের সবাই তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হঠাৎ একদল শিক্ষার্থী এসে ছেলেটিকে মারধর শুরু করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল ও জসিম উদ্দিন হল থেকে ছেলের বন্ধুরা ছুটে আসে। এ সময় সেখানে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কিন্তু এসময় তারা তাকে আহত করে পালিয়ে যায়। পরে কয়েকজন শিক্ষার্থী রিকশায় করে জোবায়েরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, একটি গ্রুপকে চিহ্নিত করে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে । শনিবারের ঘটনা একটি আলাদা  ব্যক্তিগত ঘটনা  আমি হলের প্রভোস্টকেও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।

এদিকে  ঢাবি শাখা  ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে  বলেছি ।  আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেব। নিরাপদ ক্যাম্পাস চায় ছাত্রলীগ। এখানে কোনো দলের অপকর্ম বরদাস্ত করা হবে না।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, একটি গ্রুপকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শনিবারের ঘটনাটি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। হলের প্রাধ্যক্ষকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। এ বিষয়ে কোনো তথ্য থাকলে তিনি জানাতে বলেন।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, প্রশাসনকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই। আমরাও সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নেব। নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই আমরা ছাত্রলীগ। ঢাবিতে কোনো গ্যাংয়ের অপকর্ম সহ্য করা হবে না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X