November 24, 2024
আগুনে পুড়ে ছাই দুই হাজার রোহিঙ্গা ঘর

আগুনে পুড়ে ছাই দুই হাজার রোহিঙ্গা ঘর

আগুনে পুড়ে ছাই দুই হাজার রোহিঙ্গা ঘর

আগুনে পুড়ে ছাই দুই হাজার রোহিঙ্গা ঘর

কক্সবাজারের উখিয়া বালুখালীতে তিনটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে ২ হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। গতকাল বিকাল ৩টার দিকে প্রথমে ১১ নম্বর ক্যাম্পের বি ও ই ব্লকে এই আগুনের সূত্রপাত। পরে পার্শ্ববর্তী ১০ ও ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে নাশকতার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে।

কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার  মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ১১ নম্বর ক্যাম্পের একটি বাড়ির রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা      গেছে। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে উখিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি টিম পরে কক্সবাজার শহর রামু  টেকনাফে অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের ১০টি টিম আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। তিনি জানান, ক্যাম্পের প্রতিটি বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার রয়েছে। আগুনে এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং তা নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়। অগ্নিকান্ডে এসব ক্যাম্পের দুই হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে এবং ১২ হাজার বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক অতিশ চাকমা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তিনি জানান, আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে কাজ চলছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা জানিয়েছেন, প্রাথমিক অবস্থায় ২ হাজারের মতো ঘর পুড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার রোহিঙ্গা। আগুনে পুড়ে গেছে ৩৫টি মসজিদ ও মক্তব, দুটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, একটি হেল্প পোস্ট, একটি যুব কেন্দ্র, একটি নারীবান্ধব কেন্দ্র, একটি শিক্ষা কেন্দ্র, একটি শিশুবান্ধব কেন্দ্র, একটি মানসিক পরিচর্যা কেন্দ্র। হতাহতের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি।

৮ এবিপিএনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, বেলা ৩ টার দিকে হঠাৎ করে আগুন দেখা যায়। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ক্যাম্পের ঘরগুলো পাশাপাশি হওয়ায় আগুন ১২, ১১, ১০ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের সূত্রপাত কি কারণে তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও সন্দেহজনক এক যুবককে আটক করেছে এপিবিএন ও পুলিশ। আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর বিস্তারিত বলা যাবে। ক্যাম্পের এই আগুনকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে মনে করছেন রোহিঙ্গারা। ওই ক্যাম্পের ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা আবুল কামাল, আবদুল গফুর ও শামসুল আলম জানিয়েছেন, আরসা সন্ত্রাসীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

এদিকে আগুনে পুড়ে যাওয়া রোহিঙ্গা পরিবারগুলো এখন অনিশ্চিত জীবনে রয়েছে। রাত্রিযাপন কোথায় করবে তা নিয়ে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা। তিনি জানান, প্রাথমিক অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্তদের খাবার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এরপর বিকল্পভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হবে।

উল্লেখ্য, একই ক্যাম্পে ২০২১ সালের ২২ মার্চ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই সময় ১১ জনের মৃত্যু, ৫ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছিলেন। পুড়ে গিয়েছিল ৯ হাজারের বেশি ঘর।

1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X