সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিতরণ
“সরকারি হসপিটালের ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন এর ঔষধ সরকারি সংশ্লিষ্ট ফার্মেসিগুলোতে না পাওয়া,এবং প্রাইভেট ফার্মেসিগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারি ওষুধ কম দামে বিক্রি করে দেওয়া , সর্বোপরি মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ রোগীদেরকে দিয়ে রোগীদের জীবন সর্বনাশ করা। চোরদের দৈনন্দিনকার মজার ব্যাপার হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেখার কেউ ? “
খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলায় বাবুছড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ বিতরণ করায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় জনসাধারণ। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শৃংখলা রক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।।
১৯ ফেব্রুয়ারী দুপুরে বাবুছড়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম ভূঁঞা এ-প্রতিবেদককে জানায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) বেলা ১১টায় বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামের অধীনস্থ আয়েশা বেগম , নুরজাহান বেগম, সাগর মিয়া, সজিব মিয়া সহ স্থানীয় প্রায় ২৫ জন এসে প্রাথমিকভাবে মৌখিক অভিযোগ করেন যে, বাবুছড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিদর্শিকা অনিকা চাকমা, অফিস সহকারী জ্ঞান জ্যোতি ত্রিপুরা ও কেন্দ্রের কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামের চিকিৎসা প্রার্থীদের মাঝে ঔষধ বিতরণ করেন।
উক্ত ঔষধ সেবন করে স্বাস্থ্যের অবনতি হলে ঔষধ গুলো স্থানীয়ভাবে যাচাই করা হলে মেয়াদোত্তীর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। পরে স্থানীয়রা বাবুছড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে অভিযোগ করার চেষ্টা করলে অনিকা চাকমা তাঁদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনসাধারণ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘেরাও করার চেষ্টা করে। তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে সাময়িক ভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।।
স্থানীয় জনসাধারণ বাবুছড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য বিভাগের কক্ষ থেকে সেফুরক্সিম সিরাপ, ফ্লুক্লক্সাসিলিন সিরাপ, ফ্লুক্লক্সাসিলিন ট্যাবলেট, ফেরাস হিউমারেট ট্যাবলেট সহ অনান্য ঔষধ মেয়াদোত্তীর্ণ সনাক্ত করে।
মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ সরবরাহ এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় সুবিচারের দাবিতে স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘেরাও করার চেষ্টা বিস্তার করলে বিষয়টি অবগত হয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম ঘটনা স্থলে এসে উপস্থিত হয়। এসময় এ ঘটনায় তদন্ত পূর্বক দোষীদের বিচারের আশ্বাস দেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সুবিচারের আশ্বাস পেয়ে স্থানীয়রা সাময়িকভাবে স্বাস্থ্য কেন্দ্র ঘেরাও কর্মসূচি স্থগিত করে।।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি বিভাগীয় তদন্ত হবে। তদন্তের জন্য স্থানীয় জনসাধারণ থেকে আলামত গ্রহণ করা হয়েছে।।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রক্ষিত মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ সামগ্রী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তালাবদ্ধ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাবি গ্রহণ করেন।
এছাড়াও পার্শ্ববর্তী বাবুচড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে মেজর নাহিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরাফাতুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।