ম্যাজিস্ট্রেটের সন্তানকে আসন ছেড়ে না দেওয়ায় এক নিরাপরাধ নারীর মাথা ফাটালেন দেহরক্ষী
মাদারীপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দেহরক্ষীর রিভলবারের বাঁটের আঘাতে মাথা ফেটে সাদিয়া ইসলাম নামে এক নারী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে মাথায় ৪টি সেলাই দিতে হয়েছে। বিচারকের সন্তানকে ‘ভিআইপি যাত্রী’ দাবি করে তাকে আসন ছেড়ে দিতে বলেছিলেন ওই দেহরক্ষী। সাদিয়া তাতে রাজি না হওয়ায় এ নির্যাতন নেমে আসে।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে মাদারীপুর শিল্প-সংস্কৃতি ও বাণিজ্য মেলায়। মেলায় শিশুদের চড়ার জন্য নৌকায় (বোটে) ওঠা নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন দেহরক্ষী।
জানা গেছে, ইউরোপ প্রবাসী স্বামী ও সন্তানদের নিয়ে মেলায় ঘুরতে আসেন ডাসার উপজেলার পশ্চিম মাইজপাড়া গ্রামের সাদিয়া। তিনি তাঁর সন্তানদের নিয়ে আগে ওঠেন নৌকায়। এ সময় বিচারক মামুনুর রশীদের সন্তান সেখানে গিয়ে হাজির হয়। বিচারকের দেহরক্ষী মো. ইব্রাহিম ওই নারীকে তাঁর সন্তানদের নৌকা থেকে নামাতে বলেন। সাদিয়া তাতে রাজি হননি। তখন ইব্রাহিম বলেন, ‘এ বাচ্চা ভিআইপি যাত্রী। তাকে আগে উঠতেই দিতে হবে।’
তর্কের এক পর্যায়ে ইব্রাহিম তাঁর কোমরে থাকা রিভলবার বের করে বলেন, নারী না হলে আপনাকে অনেক কিছু করতাম। এর পরে দু’জনের হাতাহাতি শুরু হয়। পরে ইব্রাহিম রিভলবারের বাঁট দিয়ে সাদিয়াকে আঘাত করলে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বের হতে থাকে। তখন তাঁর হাতে থাকা মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় হামলাকারীরা। পরে তাঁকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতলে নেওয়া হয়।
বিচারক মামুনুর রশীদ ও তাঁর কয়েকজন সহকর্মী আহত ওই নারীকে দেখতে হাসপাতালে যান। এ ঘটনায় সঠিক বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ভুক্তভোগীর স্বামী রফিকুল হাসান বিচারকের দেহরক্ষীসহ জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন।
সাদিয়া জানান, দেহরক্ষী প্রথমে ইব্রাহিমকে ঘুষি মারেন এবং পরে বন্দুক বের করে মাথায় বেশ কয়েকবার আঘাত করেন।
পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, ভিকটিম অভিযোগ না দিলেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ডাঃ রহিমা খাতুন বলেন, ঘটনার যথাযথ তদন্ত করা হবে। দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।