নামজারী বিষয়ে বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা
ভূমির নামজারি চূড়ান্তভাবে নামঞ্জুরের পূর্বে সুযোগ প্রদানের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নামঞ্জুরের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পুনরায় নির্দেশ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘ভূমি মন্ত্রণালয় আওতাভুক্ত মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অধিকতর দায়িত্বশীল নাগরিক সেবা প্রদানে নিয়মিত তাগাদা দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ভূমির নামজারি চূড়ান্তভাবে নামঞ্জুরের পূর্বে সুযোগ দেয়া এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নামঞ্জুরের কারণ সুনির্দিষ্টভাবে জানানোর জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য পুনরায় তাগিদ দিয়েছে।’
এতে বলা হয়েছে, ভূমিসেবা গ্রহীতাদের সুবিধার্থে ২০২২ সালের ১৭ জুলাই ‘ই-নামজারি সিস্টেমে নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করার বিষয়ে নির্দেশনা’ শীর্ষক এক পরিপত্রের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয় নামজারি নামঞ্জুরের করার পূর্বে বেশ কতগুলো পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল। যেমন, ডিজিটাল ভূমিসেবা সিস্টেমে বা ভূমি অফিসে সংরক্ষিত নেই এমন কোনো তথ্যের ঘাটতি থাকলেই আবেদন নামঞ্জুর না করে তথ্য দেয়ার সুযোগ দেয়া। অর্থাৎ নামজারি মামলায় প্রথম আদেশে কোনো দলিলের ঘাটতি থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে ৭ কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে আবেদনকারীকে দাখিলের জন্য অনুরোধ জানানো।
উক্ত সময়ের মধ্যে তথ্যাদি দাখিল করতে ব্যর্থ হলেই কেবল দ্বিতীয় আদেশে নামঞ্জুর করা যাবে মর্মে নির্দেশ দিয়েছিল ভূমি মন্ত্রণালয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক নিয়মিত পর্যালোচনায় অনেক ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে যে, উপরোক্ত পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী অনুপস্থিত তথ্য/কাগজপত্র জমা দেয়ার জন্য আবেদনকারীকে ৭ কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দেয়ার অনুরোধ করা হয়নি। তাছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেসব কারণে আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তা আদেশে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি বা অস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
পর্যালোচনায় আরো দেখা গেছে, প্রযোজনীয় তথ্য না থাকা, দরকারি দলিল/কাগজপত্র না থাকা, ওয়ারিশান সনদ না থাকা, খতিয়ানের মূলকপি/ফটোকপি/সহি মোহর না দেয়া, অস্পষ্ট স্ক্যান কপি দেয়া, জমির দাখিলা/হাল দাখিলা প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়া, মূল দলিল উপস্থাপন না করা, ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ না করা, ডিসিআর ফি পরিশোধ না করা, বন্টননামা দলিল সংযুক্ত না করা ইত্যাদি কারণে অনেক ক্ষেত্রেই সরাসরি নামজারি নামঞ্জুর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে উপর্যুক্ত পরিপত্র অনুযায়ী আবেদনকারীকে যুক্তিসংগত সময় দিয়ে তথ্যাদি উপস্থাপনের জন্য সুযোগ প্রদানের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
আবার, কিছু ক্ষেত্রে মালিকানার স্বপক্ষে দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপনে ব্যর্থ, জমা ভাগের আবেদন নামঞ্জুর সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ইউএলএও-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী আবেদনকারীর আবেদন সঠিক না হওয়া প্রভৃতি কারণ দেখিয়ে সরাসরি নামজারি নামঞ্জুর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট কারণ দেখানোর কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের উল্লিখিত পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী কোনো দলিলের ঘাটতি থাকলে ৭ কার্যদিবস বা যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে আবেদনকারীকে তা দাখিলের জন্য অনুরোধ না করা হয়ে থাকলে এবং নামঞ্জুরের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখসহ যথাযথভাবে আদেশ প্রদান না করা হয়ে থাকলে সে ব্যাপারে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য কালেক্টরেটে (জেলা প্রশাসন) চলতি ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আরো একটি পত্র পাঠিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে যথাযথ কারণ ছাড়া কোনো কর্মকর্তার আবেদন খারিজ না করার মতো দায়িত্বে অবহেলা থাকলে প্রতিবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে বলা হয়েছে।