কর্মক্ষেত্রে এক বছরে ১,০৩৪ শ্রমিকের মৃত্যু
কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২০২২ সালে এক হাজার ৩৪ জন শ্রমিক নিহত এবং এক হাজার ৩৭ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। এ ছাড়া নির্যাতনের শিকার হয়ে ১৩৫ জন শ্রমিক নিহত এবং ১৫৫ জন আহত হন। বিভিন্ন সেক্টরে ১৯৬টি শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) ‘বাংলাদেশের শ্রম ও কর্মক্ষেত্র পরিস্থিতি বিষয়ে সংবাদপত্রভিত্তিক বিলস জরিপ-২০২২’-এ এসব তথ্য তুলে ধরে।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় এক হাজার ৩৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। তবে ২০২১ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় এক হাজার ৫৩ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করা শ্রমিকের মধ্যে এক হাজার ২৭ জন পুরুষ এবং সাতজন নারী শ্রমিক। পাশাপাশি কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে ৩৬ জন শ্রমিক নিহত এবং ১২২ জন শ্রমিক আহত হন। নিহত শ্রমিকের মধ্যে ১৩ জন (৩৬ শতাংশ) এবং আহত শ্রমিকের মধ্যে ৫৩ জন (৪৩ শতাংশ) নারী। তবে ২০২১ সালে কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে ৯১ জন শ্রমিক নিহত এবং ১১৪ জন শ্রমিক আহত হন।
এ ছাড়া খাত অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ৪৯৯ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১৮ জনের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যু হয় হয় কৃষি খাতে। এ ছাড়া দিনমজুর ৪৬ জন, কনটেইনার ডিপোতে ৪৪ জন, মৎস্য শ্রমিক ৪৩ জন, ইলেকট্রিক শ্রমিক ২২ জন, নৌপরিবহন খাতে ১৫ জন, হোটেল-রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ১২ জন, ইটভাটা শ্রমিক ১০ জন, জাহাজ ভাঙা শিল্প শ্রমিক সাতজন, কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি শ্রমিক ছয়জন এবং অন্যান্য খাতে ১০০ জন শ্রমিক নিহত হন।
বিলস বলছে, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় এক হাজার ৩৭ জন শ্রমিক আহত হন, যার মধ্যে ৯৬৪ জন পুরুষ এবং ৭৩ জন নারী শ্রমিক।
সড়ক দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, বজ্রপাত, অগ্নিকাণ্ড, সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড়ে ট্রলারডুবি, পড়ন্ত বস্তুর আঘাত, মাথায় কিছু পড়া, বিষাক্ত গ্যাস, নৌ দুর্ঘটনা, দেয়াল বা ছাদ ধসে পড়া, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ইত্যাদি কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ।
সংবাদপত্রভিত্তিক জরিপ অনুযায়ী, ২০২২ সালে কর্মক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার হন ৩৩৮ জন শ্রমিক। এর মধ্যে ২৯৪ জন পুরুষ এবং ৪৪ জন নারী শ্রমিক। সবচেয়ে বেশি, ৯০ জন নির্যাতনের শিকার হন পরিবহন সেক্টরে।