October 18, 2024
এলাকায় বাঘের আতঙ্ক

এলাকায় বাঘের আতঙ্ক

এলাকায় বাঘের আতঙ্ক

শেরপুর সীমান্ত এলাকার গারো পাহাড়ে হাতির পর শুরু হয়েছে বাঘের আক্রমণ। গত ৬ দিনে কয়েকটি গ্রামে প্রায় ২০টি ভেড়া-ছাগলসহ গরু খেয়েছে বাঘ। বাঘগুলি প্রায় ৪/৫  ফুট লম্বা এবং প্রায় 3 ফুট উচ্চতার  বলে জানা গেছে।

বন্যপ্রাণী বিভাগ জানায়, ভারতীয় ক্যারাকাল প্রজাতির এই বাঘটি ভারতের মেঘালয়ে পাওয়া যায়। বন বিভাগ জানিয়েছে, শুধু এই বাঘই নয়, এই বনে লেপাট প্রজাতির বাঘও এসেছে।

 

২০১৬ সালে জেলার শ্রীবরদী উপজেলায় একটি বাঘ এসে স্থানীয় মেয়রসহ ১০ জনকে আহত করে। সম্প্রতি প্রায় ৫০টি বাঘ দিনের বেলায় প্রকাশ্যে বনে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে ছাগল-ভেড়া নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে গ্রামবাসী জানান, গভীর জঙ্গলে ছাগল ও ভেড়ার হাড় পড়ে থাকতে দেখেন তারা।

সাম্প্রতিক কৃত্রিম বনায়ন এবং অবনমিত বনভূমির প্রাকৃতিক গভীর বনায়নের কারণে ভারতের মেঘালয় থেকে গারো পাহাড়ে বাঘের আগমন হতে পারে। তাই  তারা বনের জমির পাশে অবস্থিত বাড়ির গৃহপালিত গবাদি পশুতে হামলা চালায়।

স্বাধীনতার পর নব্বইয়ের দশকের শেষদিকে বনদস্যু ও কিছু দুর্নীতিবাজ বনরক্ষীদের কারণে বন উজাড় হয়ে যায় । পরবর্তীতে সরকার বনভূমি রক্ষায় বনায়ন শুরু করে এবং বেশ কিছু এলাকা প্রাকৃতিকভাবে গভীর বনে পরিণত হয়।

ফলে ভারত থেকে বন্য হাতি এসে আবাসস্থল গড়ে তোলে এবং সীমান্তবর্তী গ্রামের ফসলি জমি ও বাড়িতে হামলা চালিয়ে শত শত মানুষকে হত্যা করে। দীর্ঘদিন ধরেই হাতির আতঙ্কে রয়েছে সীমান্তবাসী। সম্প্রতি এক সপ্তাহ ধরে জেলার ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী এলাকায় এবং  বাঁকুড়া, পশ্চিম বাকাকুড়া, গান্ধীগাঁও, হালচাটি ও ছোট গজনি গ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘিরে শুরু হয়েছে বাঘের আনাগোনা। ওইসব গ্রামের জঙ্গলে ও বনের ভেতর দিয়ে বিভিন্ন গ্রামে যাওয়ার রাস্তায় ও গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে ছাগল-ভেড়া নিয়ে যাচ্ছে।

বাঘের পেটে চলে যাওয়া ছাগলের অনেক মালিক বলছেন, এই বাঘরা যখন গরুর ওপর হামলা চালায়, তাদের তাড়া করলে তারা ফিরে আসে। এই ভয়ে কেউ বনে গবাদি পশুকে খাওয়াতে সাহস পায় না।

অনেক সময় ছাগলটিকে থাবা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় মালিক ও গ্রামবাসী শব্দ করে লাঠিসোঁটা নিয়ে বাঘটিকে তাড়া করে, তখন আহত ছাগলটিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়।

বাঘের এই আতঙ্কে গ্রামের স্কুলের শিশুরাও স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। সে এখন দল বেঁধে বন এড়িয়ে স্কুলে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের আরও অভিযোগ যে বন বিভাগের অধিকাংশ বনরক্ষী এবং অটো চালক এবং স্থানীয় গ্রামবাসীরা যারা বনের ভেতরে ও বাইরে চলাচল করে তারা বাঘের মুখোমুখি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

X