লংমার্চে ইমরান খানকে গুলিঃ ঘটনাস্থলেই যুবক গ্রেফতার ও এক বন্দুকধারী নিহত
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওয়াজিরাবাদে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সময় বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হয়েছেন। নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে লংমার্চের অংশ হিসেবে বুধবার ওয়াজিরাবাদে জনসভা করছিলেন ইমরান। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় এক বন্দুকধারী তাকে লক্ষ্য করে তিন থেকে চারটি গুলি করে।
ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগে হামলাকারী যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গুলি করার পর জনসভায় উপস্থিত লোকজনের হাতে ধরা পড়ে হামলাকারী। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এসময় উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তকে থাপ্পড় ও ঘুষি মারতে থাকে। এরপর পুলিশ অভিযুক্তদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পুলিশ জানায়, যুবকরা ইমরান ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের লক্ষ্য করে মোট ছয় রাউন্ড গুলি করে। ওই যুবক একাই হামলা চালিয়েছে। তবে অভিযুক্তকে অন্য কেউ সাহায্য করেছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পিটিআই নেতা আসাদ ওমর বলেন, এক ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি চালায়। কয়েকজন আহত হয়েছেন। ইমরান খানও আহত হয়েছেন। খানকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
৭০ বছর বয়সী ইমরান খান, একজন প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা হয়ে আজ পাকিস্তানের ইতিহাসে বড় মাপের জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ, তিনি দেশে আগাম নির্বাচনের দাবিতে লংমার্চ করছেন।
এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। একই সঙ্গে এ ঘটনা তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন তিনি।
রওফ হাসান নামে একজন জ্যেষ্ঠ সহযোগী জানান, যে বন্দুকধারীরা ইমরান খানকে গুলি করেছে তাদের একজন নিহত হয়েছে এবং আরেকজনকে পুলিশ আটক করেছে।
পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী বলছে, ইসলামাবাদে সমাবেশ করা খানের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে কাউকে দেশকে অস্থিতিশীল করতে দেওয়া হবে না। সংঘর্ষ বা সংঘর্ষ এড়াতে ইসলামাবাদ প্রশাসন ইতিমধ্যেই নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
লাহোরে অবস্থিত রাজনৈতিক বিশ্লেষক আসাদ রামিন বলেছেন, “পাকিস্তানে সংসদীয় ব্যবস্থা থাকলে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।” দেশে সাধারণ নির্বাচন হতে হবে। এখন আমরা দেখছি, মানুষ আস্থা হারাচ্ছে। আজ ইমরান খান গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর অনাস্থা আরো বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২৯ অক্টোবর পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খান ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন। লাহোরের লিবার্টি চক থেকে এই লংমার্চ শুরু হয়। চলতি বছরে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এটি দ্বিতীয় লংমার্চ। এই লংমার্চ শেষে ইমরান খানের দল পিটিআই ইসলামাবাদে শাহবাজ শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করার কথা রয়েছে। তবে কবে সমাবেশ হবে তা এখনো জানায়নি দলটি।