পাকিস্তানের ৭৬ বছরের সর্বোচ্চ জনপ্রিয় নেতা ইমরান খানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার রায় কী ও কেন?
পাকিস্তানের রাজনীতিতে জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে থাকা, সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সবেমাত্র উপনির্বাচনে বড় ধরনের বিজয়ে ক্ষমতাসীনরা ধাক্কা খেয়ে কি এ রায় দিল? নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য। পাকিস্তানের সাধারণ জনগণের মনে সৃষ্টি হয়েছে কঠিন ক্ষোভের । এমন রেকর্ড গড়ার রেশ কাটতে না কাটতেই বড়সড় ধাক্কা দিলেন পিটিআই চেয়ারম্যানকে।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) শুক্রবার (২১ অক্টোবর) ইমরান খানের বিরুদ্ধে দায়ের করা তোশাখানা মামলার রায় দিয়েছে। (ইসিপি) আজ সর্বসম্মত রায়ে পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত ইমরান খানকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও, পিটিআই চেয়ারম্যান আর জাতীয় পরিষদের সদস্য নন, রায়ে বলা হয়েছে। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এর একজন সদস্য গত আগস্টে ইমরান খানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় উপহার তোশাখানায় জমা না করে বিক্রি করার অভিযোগে মামলা করেছিলেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী দেশের মজলিস-ই-শুরার (পার্লামেন্ট) পাশাপাশি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনেও ইমরান খানের ভোট করার সুযোগ আর থাকলো না।
ইসিপির রায়ে বলা হয়েছে, এখন পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা শুরু হবে। এদিকে পাকিস্তানে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বলেছেন, ইমরান খানকে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করেছে।
ইমরান খানের এই রায়ের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইমরান খানের দল পিটিআই। পিটিআই নেতা ফাওয়াদ হুসেন চৌধুরী ইসিপির রায়কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, এটা লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত। তারা ২২ কোটি মানুষের মুখে থাপ্পড় মেরেছে। এই রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে দলটি। এছাড়া ইমরানের সমর্থকরা বিভিন্ন শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে।
কঠিন বিক্ষোভ ফেটে পড়েছে পাকিস্তানের জনতা । পাকিস্তানের প্রায় সকল স্থানে বিক্ষোভ করছেন ইমরান খানের সমর্থকরা।
এখন প্রশ্ন এই রায়ের পর ইমরান কতটা বিপদে? পাকিস্তানের আইনজীবী আসাদ রহিম খান বলেছেন, এটি একটি অর্থহীন রায়। এ ছাড়া ইমরানকে অযোগ্য ঘোষণার রায়কে ‘তামাশা’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক মোশাররফ জাইদি।
ইসিপির সাবেক সচিব কানওয়ার দিলশাদ এটাকে ইমরানের জন্য মৃদু শাস্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন। তা ছাড়া ইমরানের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা আজীবন নাকি সীমিত সময়ের জন্য তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হয়নি। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খান বলেছেন, এই ইস্যুটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এখন দেখার সময় এই রায়ে ইমরান কতটা দমে যেতে পারেন। সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে গত বছরের এপ্রিলে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান।