বিমান দুর্ঘটনায় মালাউয়ের ভাইস প্রেসিডেন্ট সহ ১০ জন নিহত
বিমান দুর্ঘটনায় আফ্রিকান রাষ্ট্র মালাউইয়ের ভাইস-প্রেসিডেন্ট সাওলাস চিলিমাসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির সাবেক ফার্স্ট লেডিও নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য সান জানিয়েছে।
একজন ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা বিশ্বাস করেন বিমানটি চিকানগাওয়া জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়েছে। কিন্তু তা এখনো পাওয়া যায়নি। যাইহোক, পরে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছিল যে এটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং সমস্ত যাত্রী নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে রাষ্ট্রপতি ও মন্ত্রিপরিষদের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে ৫১ বছর বয়সী ভাইস প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, “দুর্ভাগ্যক্রমে, বিমানটিতে থাকা সকলেই নিহত হয়েছেন। সোমবার সকালে রাজধানী লিলংওয়ে থেকে সামরিক বিমানটি উড্ডয়নের পর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সকালে মালাউইর প্রতিরক্ষা বাহিনীর কমান্ডার পল ভ্যালেন্টিনো ফিরি বলেন, ঘন জঙ্গল ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গতকাল লিলংওয়ে ছেড়ে যাওয়ার পর মালাউই প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিমানটি “রাডারের বাইরে চলে গেছে”। স্থানীয় সময় সকাল ১০টার কিছু পরেই বিমানটির দেশের উত্তরে মোজুজু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে বিমানটিকে রাজধানী লিলংওয়ের বিমানবন্দরে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পর সেটিই অদৃশ্য হয়ে যায় ।
সোমবার গভীর রাতে এক বক্তৃতায় প্রেসিডেন্ট লাজারাস চাকভেরা বলেন, ভাইস প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। “সৈন্যরা এখনও তল্লাশি চালাচ্ছে এবং বিমানটি না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি কঠোর নির্দেশ দিয়েছি,” তিনি বলেন।
এর আগে প্রেসিডেন্ট চাকভেরা বাহামাসে তার ফ্লাইট বাতিল করেন। সোমবার সন্ধ্যায় তার সফরে যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল বিমানটি নিখোঁজ হলেও আজ বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গতকাল প্রয়াত ক্যাবিনেট মন্ত্রী রালফ কাসাম্বারার শেষকৃত্যে যোগ দিতে বিমানটি যাচ্ছিল। কিন্তু পথে তিনি নিজেই দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন এবং বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।
জানা গেছে, গত সোমবার (১০ জুন) বিমানটি নিখোঁজ হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চিলিমাকে বহনকারী প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি বিমান স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৭ মিনিটে রাজধানী লি লংওয়ে থেকে ছেড়ে যায়। স্থানীয় সময় ১০টা ২০ মিনিটে এম জুজু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।
তবে প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে বেশি দেরিতে বিমানটির সন্ধান না পাওয়ায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। একদিনের চেষ্টায় খুঁজে যাওয়া যায় বিমানটির ধ্বংসাবশেষ। বিমানটি চিকাংওয়া পাহাড়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের ভারজাগানের পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় রাইসি, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানসহ ৮ যাত্রীর সবাই নিহত হন। এর আগে হেলিকপ্টারটি রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। অনেকক্ষণ পর উদ্ধারকারীরা এর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পান।