সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ
সুদানে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি রয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
সুদানে বর্তমানে একটি যুদ্ধবিরতি চলছে, তবে যুদ্ধবিরতির মধ্যে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। আটকে পড়া বাংলাদেশিদের প্রথমে খার্তুম থেকে সুদান বন্দরে এবং সেখান থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হবে।
জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ বিমানের কয়েকটি ফ্লাইটে এসব বাংলাদেশিদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সুদানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতিমধ্যেই খার্তুম থেকে ৮৫০ কিলোমিটার দূরে সুদান বন্দরে বাংলাদেশীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য খার্তুম এবং এর আশেপাশের শহরগুলো থেকে ৯টি বাসের ব্যবস্থা করেছেন।
দূতাবাসকে সহায়তা করতে জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের একটি দল আগামীকাল সুদানে পৌঁছাবে।
১৫ এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। গত দুই সপ্তাহে এই সংঘাত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এ পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বেসামরিক নাগরিকদের পাশাপাশি তাদের মধ্যে জাতিসংঘের কর্মী, মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সুদান থেকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
সৌদি সরকার পোর্ট সুদান থেকে বন্দর জেদ্দায় বাংলাদেশিদের পরিবহনের জন্য তাদের নৌবাহিনীর জাহাজ বিনামূল্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আগামী ২ মে এর মধ্যে সব বাংলাদেশিকে বন্দর সুদানে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য রাষ্ট্রদূত বর্তমানে পোর্ট সুদানে রয়েছেন।
বাংলাদেশিরা ৩ বা ৪ মে এর মধ্যে জেদ্দায় পৌঁছাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জেদ্দার দুটি বাংলাদেশ স্কুলে সুদানী প্রবাসীদের জন্য খাবার, পানীয়, ওষুধ এবং অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা ভ্রমণের পর প্রবাসীদের যেন কোনো শারীরিক সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে পোর্ট সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও প্রবাসীদের জন্য খাবার, পানীয়, ওষুধ ও অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সুদানী প্রবাসীরা যেদিন জেদ্দায় পৌঁছাবে সেদিন থেকেই বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে তাদের ঢাকায় ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরের প্রাক্কালে তিনি বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার নির্দেশ দেন। যদিও সুদানের রাষ্ট্রদূতের কার্যালয় এবং বাসভবনে আঘাত হেনেছে, তবে তিনি ভিন্ন অবস্থান থেকে কাজ করছেন।
ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিবের নির্দেশনায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, জেদ্দার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের কনসাল জেনারেল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সুদানী প্রবাসীদের নিরাপদে এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন করতে বদ্ধপরিকর।