সুদানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা আতঙ্কে
সেনাবাহিনী ও মিলিশিয়াদের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সুদানে আটকা পড়েছে দেড় হাজারের বেশি বাংলাদেশি। প্রচণ্ড লড়াইয়ের মধ্যে তারা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। অনেক জায়গায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি রয়েছে পানির সংকট। আকস্মিকভাবে যুদ্ধ শুরুর কারণে তারা আর্থিক সংকটেও পড়ে। প্রাণের ভয়ে এসব মানুষ দেশে ফিরতে উদগ্রীব।
সুদান থেকে কীভাবে বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে আনা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ করছেন। আটকে পড়াদের মধ্যে ৫৫০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি ফিরতে নাম নিবন্ধন করেছেন।
১৫ এপ্রিল সুদানে সেনাবাহিনী এবং মিলিশিয়া র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) সদস্যদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১৫এপ্রিল সুদানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের কর্মীসহ অন্তত ৪০০ জন নিহত হয়েছে। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
দেশের অধিকাংশ হাসপাতাল বন্ধ। পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি আটকে পড়া মানুষের ঘরের খাবার ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে দেশে মানবিক সংকটের আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা জানান, চুরি, ছিনতাই, ছিনতাই অনেক বেড়ে গেছে। সামরিক এবং আধা-সামরিক বাহিনী উভয়ই টাকা, মোবাইল বা গহনা নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। নেই কোনো পুলিশি ব্যবস্থা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সুদানে মোট ১৫০০ থেকে ১৮০০ বাংলাদেশি রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের বেশির ভাগই চাকুরি ও ব্যবসা করে।
বাংলাদেশি কমিউনিটি সুদানের প্রেসিডেন্ট সুলতান দানেশ আলী বলেন, হঠাৎ যুদ্ধের কারণে আমাদের কাছে কোনো অর্থ নেই। যুদ্ধের কারণে ব্যাংক বন্ধ, তাই হাতে টাকাও নেই।
সুলতান দানেশ আলী বলেছেন, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় (বাংলাদেশ সময় ৯টা) দুই পক্ষের মধ্যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হবে। যে কেউ শহর ছেড়ে যেতে চাইলে এই সময়ের মধ্যেই চলে যেতে হবে।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে আরও অনেক বাংলাদেশি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিক খার্তুম ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও তারা আপাতত সুদান ছেড়ে যেতে পারে না, তবে তারা খার্তুম ছেড়ে নিরাপদ কোথাও যেতে চায়।
এমন অদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশিদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছে সেখানকার দূতাবাস। রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ও দূতাবাসে গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিরাপদে আছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের অন্য দেশের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।